পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ১ ব্লকের বেলুটি গ্রামের বাসিন্দা জগন্নাথ বাউড়ি। বর্তমানে তিনি আউশগ্রামের জয়কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। জগন্নাথ বাবু বলেন, “আমিও বন্ধুদের সঙ্গে একবার পুরী গিয়েছিলাম। আমার বন্ধু তখন রথের রশিতে টান দিয়েছিল। চাইলে আমিও পায়ে করে রশি তুলে ঘাড়ের মধ্যে নিয়ে টানতে পারতাম। কিন্তু তিনি ভগবান। আমার সেটা করা ঠিক হবে না, তাই পিছিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সেদিন আমার খুব কষ্ট হয়েছিল।”
advertisement
জন্ম থেকেই তাঁর দুটি হাত নেই। দুই পা তাঁর ভরসা৷ পা দিয়েই চামচে করে খাবার খান৷ আবার পা দিয়েই স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডে চক ডাস্টার দিয়ে পড়ুয়াদের পড়ান। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আউশগ্রামের জয়কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পা দিয়েই তিনি স্কুলে পড়াশোনা করান। এমনকি পা দিয়েই চায়ের কাপ ধরে চা পান করেন জগন্নাথ৷ মনের অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি৷ তারপর ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারিতে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। চাকরি পাওয়ার আগে ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্নকর্তাদের বোর্ডে পা দিয়ে লিখে তাঁর পারদর্শিতা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন৷ দুটো হাত না থাকায় তাঁর মা ছেলের নাম রেখেছিলেন জগন্নাথ।
আরও পড়ুন : ভাতের পাতে এই ডাল জাস্ট ১ হাতা! কোলেস্টেরল কমিয়ে সুস্থ হার্ট! ওজন কমিয়ে দফারফা ব্লাড সুগারের!
জয়কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চন্দন মণ্ডল বলেন, “জগন্নাথবাবুকে প্রথম দেখলে অবাক লাগবে। কিন্তু আমাদের দেখে দেখে অভ্যাস হয়ে গেছে। উনি পারদর্শিতার সঙ্গে সব সামলান। আমাদেরও ভাল লাগে, জগন্নাথবাবুর ইচ্ছাশক্তিকে কুর্নিশ।” তিনি আবার ভাল গানও করেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। শুধু তাই নয় স্কুলছুট কমাতে এলাকায় অভিভাবকেদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও বোঝান তিনি৷ পাশাপাশি খেলাধুলোর জন্যও পড়ুয়াদের উৎসাহ জোগান জগন্নাথবাবু৷