আসলে যুগের চাকা এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানও এগিয়ে চলেছে। আর বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করছেন, যা খুবই অনন্য। সেই সঙ্গে বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন আবিষ্কার তাক লাগিয়ে দিচ্ছে মানুষকেও। বিজ্ঞান উপহার দিয়েছে নতুন জীবনযাপনের ধারা। আগে কোনও রোগ হলে মানুষ জানতে পারত না। ধীরে ধীরে বিজ্ঞান উন্নত হয়েছে। ফলে এখন আমাদের শরীরে রোগ-ব্যাধি বাসা বাঁধলে তা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। তবে এ-বার আগে থেকেই রোগের বিষয়ে সতর্ক হতে পারবে মানুষ। কোনও মেডিক্যাল ডিভাইসের মাধ্যমে নয়, বরং ট্যাটুর মাধ্যমে! এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
advertisement
আরও পড়ুন- শরীর জুড়ে বসত করে থর, ক্যাপ্টেন আমেরিকা: কানাডার যুবকের কাণ্ড দেখে হতবাক বিশ্ব!
শুনে তাজ্জব বনে গেলেও এটাই সত্যি! আর এই নিয়ে কাজ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) বিজ্ঞানীরা। একটি চমকপ্রদ দক্ষিণ কোরিয়ান ন্যানোটেক ট্যাটু (South Korean Nanotech Tattoo) আবিষ্কারের জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। আর এই গবেষণা যদি সফল হয়, তা-হলে চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটা আমূল পরিবর্তন আসতে পারে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, যা মানুষের শরীরে ট্যাটু হিসেবে তৈরি করা হবে। যার সাহায্যে মানুষের শারীরিক অবস্থার কথা জানা যাবে। ফলে কোনও রোগ বাসা বাঁধলে তা অবিলম্বে সেই বিষয়ে জানান দেবে রোগীকে।
ট্যাটু দেবে সংকেত:
কোরিয়ান অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা একটি ইলেকট্রনিক ট্যাটুর কালি বা ইঙ্ক (Tattoo Ink) তৈরি করেছেন। যা বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে তরল ধাতু বা লিক্যুইড মেটাল (Liquid Metal) এবং কার্বন ন্যানোটিউব (Carbon Nanotube)। এটি একটি বায়োইলেকট্রোডের (Bioelectrode) মতো কাজ করে। এই ট্যাটুটি ইসিজি ডিভাইসের সঙ্গে যোগ করা হবে, যাতে এটি আমাদের শরীরের হৃদযন্ত্রের অবস্থার কথা জানান দিতে পারে। এ-ছাড়াও দেহের গ্লুকোজের মাত্রা সম্পর্কেও তথ্য দেবে ওই ট্যাটু, যা মনিটরে প্রকাশ পাবে।
পরবর্তী কালে গবেষকরা আরও বায়োসেন্সর ব্যবহার করতে চান, যা আরও হাই-টেক হিসেবে প্রমাণিত হবে। এই প্রোজেক্টের লিডার স্টিভ পার্ক বলেন যে, তাঁরা পরে ট্যাটু ইঙ্ক-সহ একটি ওয়্যারলেস চিপ ঢুকিয়ে দেবেন, যা বাইরের ডিভাইসে একটি সংকেত পাঠাবে। তাতে শরীরের হালও জানা যাবে। আর যে মনিটরে চিপটি সংকেত পাঠাবে, তা রোগীর বাড়িতেও ইনস্টল করা যেতে পারে। ট্যাটুর এই কালির বিশেষত্ব হল এটি মুছে ফেলার পরেও এটি শরীর থেকে একেবারে মুছে যাবে না। আসলে ট্যাটুর এই কালি গ্যালিয়ামের মতো কণা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।