কিন্তু এমন একটি বিড়ালের কথা জানা যায়, যার মধ্যে আশ্চর্য রকমের ক্ষমতা ছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। ওই বিড়ালটি নাকি মুমূর্ষু মানুষের আয়ুষ্কাল ঘোষণা করতে পারত। কোনও ব্যক্তির মৃত্যু আসন্ন বুঝলেই বিড়ালটি তাঁকে জড়িয়ে ধরত।
advertisement
২০০৫ সালে, ছ’মাসের একটি ছোট্ট বিড়াল ছানাকে ‘থেরাপি ক্যাট’ হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয় আমেরিকার একটি নার্সিং হোমে। নাম রাখা হয় অস্কার। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটা বিশ্বাস করা হয় যে পোষ্যদের সাহচর্যে মানুষের কষ্ট কমে।
প্রাথমিক ভাবে অস্কার খুবই ভীতু বিড়াল ছিল। সব সময়ই খাটের তলায় লুকিয়ে বসে থাকতে পছন্দ করত। কিন্তু তার মধ্যেই একটা অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করতে শুরু করেন চিকিৎসক ও নার্সরা। চিকিৎসাধীন রোগীদের মৃত্যুর পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতা নাকি ছিল অস্কারের।
আরও পড়ুন: নদীর পাড়ে বসেই তিস্তার টাটকা বোরোলির ঝাল! পর্যটকদের জন্য আরও পদ রয়েছে এই ‘হেঁশেলে’
ওই নার্স ও চিকিৎসকদের দাবি, তাঁরা প্রথম প্রথম বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু দেখা যায়, স্বভাবত লাজুক অস্কার মাঝে মধ্যেই কোনও একজন রোগীর বিছানায় উঠে পড়ে। তার পাশেই হামাগুড়ি দেয়। এমনকী তাকে জড়িয়েও ধরে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। অন্তত ২০ বার বিষয় ঘটার পর নড়ে বসেন চিকিৎসকরা। আরও ভাল করে লক্ষ করা হয় অস্কারের গতিবিধি। দেখা যায় সত্যিই এমন ঘটছে।
ব্রাউন ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্য গবেষক ডা. ডেভিড ডোসা জানান, এমনিতে অস্কার বাইরে আসতে চাইত না। কিন্তু কোনও রোগী মরণাপন্ন হলেই তাকে সঙ্গ দিতে চলে যেত ও।
কী ভাবে বুঝতে পারত অস্কার! এটা কি কোনও আধিদৈবিক বিষয়! নাকি অন্য কিছু!
গবেষকদের অনুমান, অস্কারের ঘ্রাণ শক্তি প্রবল ছিল। মৃতকোষ থেকে নির্গত জৈব রাসায়নিক গন্ধ হয়তো সে পেত। জৈবিক ভাবেই সে অনুভব করত মৃত্যু। তখনই নিঃসঙ্গ মৃত্যু পথযাত্রীর পাশে থেকে তাঁর কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করত অস্কার।
ওই হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, একবার এক রোগী মরণাপন্ন হয়ে পড়েছিলেন। সকলেই চেয়েছিল অস্কার তাঁর কাছে আসুক। কিন্তু অস্কার আসেনি। বরং সে তখন খেলা করছিল অন্য এক রোগীর সঙ্গে। তিনি বেশ সুস্থই ছিলেন তখন। কিন্তু দেখা যায় ওই রোগীই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন আগে। অস্কারের অনুভব নির্ভুল।
প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর ভবিষ্যৎবাণী নির্ভুল ভাবে করেছিল অস্কার। ২০২২ সালে তার মৃত্যু হয়।