আরও পড়ুন- আইপিএলের নিলামে কী হল ? কোন ক্রিকেটার কত টাকায় কোন দলে যোগ দিলেন ?
জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের পাইথক গ্রামের বাসিন্দা জ্ঞানেশ্বর ওটে। পেশায় তিনি একজন সাদামাটা কৃষক। সম্প্রতি ওই কৃষক লক্ষ্য করেন তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। একসঙ্গে এতগুলো টাকা তিনি তাঁর জীবদ্দশায় চোখে দেখেননি কখনও। ফলে স্বভাবতই প্রথমে কিছুটা হতবাক হয়ে যান তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে সাত বছর আগে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দেওয়া ১৫ লক্ষ টাকার প্রতিশ্রুতির কথা মনে পড়ে যায় জ্ঞানেশ্বরের। সে কারণেই এই ১৫ লক্ষ টাকা পাওয়ার ঘটনা তিনি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানাননি বলে জানা গিয়েছে।
advertisement
ঘটনার বেশ কয়েকদিন পর ওই কৃষক তাঁর অ্যাকাউন্টের ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ৯ লক্ষ টাকা তুলেও নেন বাড়ি তৈরির জন্য। ফলে তাঁর অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকে ৬ লক্ষ টাকা। এরই মধ্যে হুঁশ ফেরে ব্যাঙ্ক কর্মকর্তাদের। তাঁরা লক্ষ্য করেন ভুলবশত জ্ঞানেশ্বরের অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। এর পরই ওই কৃষকের অ্যাকাউন্ট থেকে জমা হওয়া ১৫ লক্ষ টাকা ফেরাতে উদ্যোগী হন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জ্ঞানেশ্বর ৯ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়ায় ফলে তাঁর অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকা ৬ লক্ষ টাকা শেষ পর্যন্ত হাতে পান ব্যাঙ্ক কর্মকর্তারা। পাশাপাশিই কৃষককে ইতিমধ্যেই বাকি ৯ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
ওই ১৫ লক্ষ টাকা স্থানীয় পঞ্চায়েতের উন্নতি প্রকল্পের টাকা বলে জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তাঁরা এও জানিয়েছে, ভুলবশত তা ওই কৃষকের অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে।
ঘটনায় ইতিমধ্যেই নিরাশ হয়েছেন ওই ব্যক্তি। কীভাবে ওই টাকা তিনি ব্যাঙ্কে ফেরাবেন সেই ভাবনাই এখন কুরে কুরে খাচ্ছে ওই হতদরিদ্র কৃষককে। তবে ১৫ লক্ষের প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য ইতিমধ্যেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে শুভেচ্ছাবার্তাও পাঠিয়েছেন ওই কৃষক। কিন্তু ১৫ লক্ষের প্রতিশ্রুতি যে কোনও অংশেই পূরণ হয়নি তা কৃষকের ঘটনায় ফের একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল।
কিন্তু কী সেই প্রতিশ্রুতি যা আজও পূরণ হল না?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঠিক সাত বছর আগে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তৎকালীন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি কালো টাকা উদ্ধার করবেন। শুধু কালো টাকা উদ্ধারই নয়, সেই টাকা তিনি বিলিয়ে দেবেন দেশের প্রত্যেকটি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। টাকার অঙ্কটা নেহাৎ কম নয়, এক কিংবা দু'লক্ষ নয়, তার পরিমাণ হবে ১৫ লক্ষ টাকা। নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে সে বার ক্ষমতায় এসেছিল এনডিএ। এরই মধ্যে গঙ্গা নদী দিয়ে জল গড়িয়ে গিয়েছে অনেক দূর পর্যন্ত। সাম্প্রতিক সময়ে নোট বন্দি থেকে শুরু করে, দেশের মানুষের জন্য জনধন যোজনায় জিরো ব্যালেন্সের অ্যাকাউন্ট সবই হয়েছে। কিন্তু ১৫ লক্ষ তো দূর অস্ত, আজও পর্যন্ত দেশের কোনও মানুষের অ্যাকাউন্টে উদ্ধার হওয়া কালো টাকার ১৫ পয়সা পর্যন্ত দিতে পারেনি সরকার। ফলে স্বভবতই ১৫ লক্ষের প্রতিশ্রুতি আজও যে পূরণ হয়নি তা বলাই বাহুল্য!