চিলির ঘটনা। ৬০ বছরের পুরনো একটি ব্যাঙ্কের পাসবই নিয়েই যাবতীয় কাণ্ডকারখানা। জানা গিয়েছে, চিলির বাসিন্দা এক্সেকুইল হিনোজোসা বাড়ি পরিষ্কার করতে শুরু করেছিলেন। সেই সময়ই তাঁর হাত পড়ে কিছু বাতিল জিনিসপত্রে। সেগুলি সবই তাঁর পরলোকগত পিতার। ওই আবর্জনার স্তূপের মধ্যেই ছিল একটি পাসবুক। প্রায় ৬০ বছরের পুরনো। এক দশক আগে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা তাঁর বাবা ছাড়া আর কেউ জানতেন না।
advertisement
এক্সেকুইলের বাবা একটি বাড়ি কেনার জন্য ১৯৬০-৭০ সাল নাগাদ একটি ব্যাঙ্কে প্রায় ১.৪০ লক্ষ পেসো (চিলির মুদ্রা) জমা করেছিলেন। যার বর্তমান মূল্য ১৬৩ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ১৩,৪৮০ টাকা। কিন্তু ঘটনা হল সেই সময় এই অর্থের মূল্য অনেক বেশি ছিল।
অজানা এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা জানতে পেরে এক্সেকুইলের খুশি ধরে না। কিন্তু ওই ব্যাঙ্কটি অনেকদিন আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। টাকা আর পাওয়া যাবে না ধরে নিয়েছিলেন যখন, ঠিক তখনই চোখে পড়ে পাসবুকের উপর লেখা দু’টি শব্দ। সেখানে লেখা ছিল ‘স্টেট গ্যারান্টিড’। অর্থাৎ ব্যাঙ্ক টাকা দিতে ব্যর্থ হলে সরকার তা দেবে।
আরও পড়ুন– সিদ্ধান্ত বদল ! অবসর ভেঙে ফের ক্রিকেটে ফিরছেন মনোজ তিওয়ারি
সেই মতো সরকারের কাছে আবেদন জানান ওই ব্যক্তি। কিন্তু বর্তমান সরকার এই টাকা দিতে অস্বীকার করে। এরপর আর কোনও পথ থাকে না। একমাত্র উপায় আইনি লড়াই।
সেই পথই বেছে নেন এক্সেকুইল। সোজা মামলা ঠুকে দেন সরকারের বিরুদ্ধে। আদালতে যুক্তি দেন, টাকাটি তাঁর বাবার কষ্টার্জিত। সরকার এই টাকা ফেরত দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছিল। যুক্তি-তর্ক শুনানি শেষে আদালত সুদ ও মহার্ঘ্য ভাতা-সহ ওই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানায়। সুদ ও মহার্ঘ্য ভাতা-সহ এক্সেকুইলের বাবার জমানো টাকা এখন দাঁড়িয়েছে ১ বিলিয়ন পেসো অর্থাৎ ১.২ মিলিয়ন ডলারে। এই পরিমাণ টাকাই ফেরত দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে লড়াই এখানেই শেষ নয়। নিম্ন আদালতের এই সিদ্ধান্তকে সর্বোচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছে সরকার। এখনও সেই মামলা সম্পর্কে সবটা জানা যায়নি। তবে নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকলে এক্সেকুইল ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০ কোটি টাকা পেতে পারেন।