এখন প্রশ্ন হল কে এই মান্ধাতা ? মহাভারতে রয়েছে এর ব্যাখা। রাজা যুবনাশ্ব তখন অযোধ্যার রাজা। তিনি ইক্ষ্বাকু বংশের রাজা। কিন্তু রাজার কোনও সন্তান ছিল না। সন্তান লাভের জন্য অনেক কিছু করেন এই রাজা। এমনকি অশ্বমেধ যজ্ঞও করেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না দেখে। রাজা মন কষ্টে জঙ্গলে চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তপস্যা শুরু করেন সন্তান লাভের জন্য। একসময় রাজার খুব জল তেষ্টা পায়। তখন তিনি চ্যবন ঋষির আশ্রমে যান। কিন্তু তাঁকে জল দেওয়ার মতো আশ্রমে কেউ ছিল না। যজ্ঞবেদীর উপর রাখা একটি জল ভর্তি কলস দেখে সেই জলই যুবনাশ্ব পান করে নেন। এর পর ঋষি আশ্রমে ফিরে সব দেখে রেগে যান। ঋষি জানান রাজাকে যে এই জল তাঁর স্ত্রীয়ের জন্য ছিল। এই জল খেলে তাঁর স্ত্রী সন্তান লাভ করতেন। কিন্তু জল যখন রাজা খেয়েছেন তখন ফল তো পেতেই হবে। অতএব রানির বদলে রাজাই হলেন গর্ভবতী।
advertisement
এরপর রাজার বাম দিকের পেট কেটে বার করা হয় সন্তানকে। পুত্র সন্তান লাভ করেন রাজা। এই ছলের নাম রাখেন মান্ধাতা। এই শিশুকে দেখতে আসেন দেবরাজ ইন্দ্র। দুধ খাওয়ার জন্য কাঁদলে ইন্দ্র নিজের আঙুল মুখে ধরে মান্ধাতার। জন্ম থেকে দুধ খাওয়ানো সব কিছুই করেন পুরুষরা। অবাক হতে হয় কত বছর আগে মহাভারতে এই আশ্চর্য গল্পের কথা লেখা আছে। পুরুষদের সন্তান ধারণ করার কথা আজ ভাবছে পৃথিবী। আর সে সময় নাকি এমনটাই হয়েছিল। এই মান্ধাতা মাত্র ১২ বছরেই বিশাল শরীর লাভ করেছিল। যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ছিল। যে মান্ধাতাকে আমরা মাঝে মধ্যেই টেনে আনি। সে সত্যিই ছিল। আর তাঁর রাজত্বকালও ছিল। অতএব মান্ধাতা আমল শুধু কথার কথা নয়।