ঝাড়িয়ার কয়লার খনিতে আগুন লেগেছিল প্রায় ১৯১৬ সালে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আগুন প্রাকৃতিক কারণে নয়, বরং অবৈজ্ঞানিক খনন ও নিরাপত্তাজনিত অবহেলার কারণে হয়। খননের পর অনেক জায়গা খোলা রাখা হয়েছিল, যার ফলে কয়লা বাতাসের সংস্পর্শে এসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জ্বলে উঠেছিল।
সময় যত গিয়েছে, আগুন আন্ডারগ্রাউন্ড লেয়ারগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আজও ঝাড়িয়ার কিছু বর্গকিলোমিটার এলাকায় এটি সক্রিয়। কয়লা অবিরাম জ্বলতে থাকার কারণে মাটির নিচে তাপমাত্রা এবং বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। অনেক জায়গায় মাটি এত দুর্বল হয়ে গেছে যে কোনও মুহূর্তে ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
advertisement
ঝাড়িয়ার অবিরাম কয়লার আগুনের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে স্থানীয় মানুষের উপর। ক্রমাগত জ্বলতে থাকা কয়লার কারণে মাটি ধসে যাচ্ছে, অনেক ঘর এবং রাস্তা ভেঙে পড়েছে। বাতাসে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড মতো বিষাক্ত গ্যাস মিশে আছে। এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে—শ্বাসকষ্ট, ত্বকের সমস্যা এবং ফুসফুসের রোগ বাড়ছে। মাটির নিচের তাপমাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে জীবন অসহনীয় হয়ে যায়।
অনেকে এখনো নিজেদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে বাধ্য, তবে দারিদ্র্য এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাব তাদের একই স্থানে আটকে রাখছে। ঝাড়িয়ার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকার এবং ভারত কোকিং কয়ল লিমিটেড (BCCL) বহুবার চেষ্টা করেছে। ২০০৯ সালে Jharia Rehabilitation and Development Plan (JRDP) শুরু করা হয়, যার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ পরিবারকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্য ছিল। তবে আগুনের তীব্রতা এবং আন্ডারগ্রাউন্ড ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে এটি প্রযুক্তিগতভাবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব।
আরও পড়ুন- কেমন আছেন শ্রেয়স আইয়ার? চোট পেয়ে অন্তত ৩ মাস মাঠের বাইরে
আজ ঝাড়িয়া শুধুমাত্র একটি শহর নয়, এটি অপরিকল্পিত খনন ও পরিবেশগত অবহেলার সতর্কবার্তা হয়ে উঠেছে। এই আগুন প্রমাণ করে যে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার যত্ন সহকারে না করলে তার প্রভাব পুরো এক প্রজন্মকে ভুগতে হতে পারে।
