এমনটাই ঘটেছিল তামিলনাড়ুর ভিলুপুরামের উদয়কুমারের সঙ্গে। ইউক্রেনের তরুণী আনাস্তাসিয়ার সঙ্গে প্রথম ডেটে গিয়ে যা হল! আজীবন মনে থাকবে। অবশ্য সব বাধা টপকে শেষ পর্যন্ত তাঁরা বিয়ে করেছেন। সেই গল্প একেবারে সিনেমার মতো।
advertisement
তামিলনাড়ুর উদয়কুমার কোয়েম্বাটুর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করেন। তারপর চলে যান স্লোভাকিয়া। সেই সময় আনাস্তাসিয়ার সঙ্গে আলাপ। প্রথম আলাপেই বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। কিন্তু গণ্ডগোল বাঁধল প্রথম ডেটে।
আর অনলাইনে নয়, উদয়কুমার ঠিক করলেন, আনাস্তাসিয়ার সঙ্গে এবার দেখা করতে হবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। সরাসরি পৌঁছলেন ইউক্রেনে। কিন্তু আনাস্তাসিয়া কোথায়? কেউ নেই। এদিকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তাঘাট অচেনা। কোথায় যাবেন, কী করে খুঁজবেন, এই সব ভাবতে ভাবতেই মাথার চুল ছেঁড়ার মতো অবস্থা।
এদিকে আনাস্তাসিয়াও উদয়কে খুঁজছেন। দেখছেন, সময় গড়িয়ে যায়, কিন্তু উদয় আসে না। এদিকে ফোনও ধরছে না। রীতিমত ভয় পেয়ে যান। শেষে একটা দোকান থেকে ফোন করে কোনওমতে সঠিক জায়গায় পৌঁছন উদয়কুমার। দেখা হয় আনাস্তাসিয়ার সঙ্গে।
ধীরে ধীরে প্রেম হল। অনলাইনে চ্যাটিং, মাঝেমধ্যে ডেট, এভাবেই চলল পাঁচ বছর। এবার বিয়ে। কিন্তু বাড়িতে রাজি করানোই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। উদয়কুমারের পরিবার প্রথমে রাজি হয়নি। বিদেশি বউ তাঁরা মানবেন না। তাঁর কাকা চক্করাই পেরিয়ার-ভক্ত। তিনি সবাইকে বোঝান। অবশেষে পরিবার সম্মতি দেয়। বিয়ে ঠিক হয়।
আনাস্তাসিয়ার পরিবার অবশ্য আপত্তি জানায়নি। তামিল রীতিতে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ে করতে সপরিবারে ইউক্রেন থেকে ভারতে আসেন আনাস্তাসিয়া। কাপ্পিয়ামপুলিয়ুর পেরুমল মন্দিরে তাঁদের চার হাত এক হয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আনাস্তাসিয়ার মা ও আত্মীয়রা স্লোভাকিয়ায় চলে যান। তাঁর বাবা বিয়েতে আসতে পারেননি। ইউক্রেনে পুরুষদের না কি দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। আনাস্তাসিয়া এখন ভিলুপুরমেই রয়েছেন। সংসার করছেন।
উদয়কুমার জানান, ঘরের সব কাজ একা হাতে সামলান আনাস্তাসিয়া। সঙ্গে তামিলও শিখছেন। পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ভাঙা ভাঙা তামিলে কথাও বলছেন। সুখেই কাটছে তাঁদের দাম্পত্য জীবন।