স্বামী বিবেকানন্দের ক্ষুরধার বুদ্ধি, তেজস্বী আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি। এমন ব্যক্তিত্ব অত্যন্ত বিরল।
মানুষ হিসেবে বিবেকানন্দ কেমন, তার বর্ণনা দিয়ে বাঙালি ইতিহাসবিদ শঙ্কর একটি বই লিখেছিলেন। যার নাম ‘দ্য মঙ্ক অ্যাজ এ ম্যান’। সেখানেই বলা হয়েছে যে, তাঁর ব্যক্তিত্বের মধ্যে একাধিক চমৎকার বৈশিষ্ট্য ছিল। স্বামী বিবেকানন্দের পড়াশোনা থেকে শুরু করে খাবারের প্রতি তাঁর ভালবাসা- এই সমস্ত কিছুই ফুটে উঠেছে এই বইয়ে। তার ভিত্তিতেই আজ স্বামী বিবেকানন্দের ব্যক্তিত্বের এক দুর্দান্ত দিকের কথা বলা যাক।
advertisement
চা আর খাবারের প্রতি গভীর প্রেম ছিল স্বামী বিবেকানন্দের:
সেই সময় অনেকেই চা বর্জন করেছিলেন। কারণ চা আসলে ছিল ব্রিটিশদের দেওয়া উপহার। কিন্তু বাংলার বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী এমনকী স্বামী বিবেকানন্দও চা-প্রেমী ছিলেন। স্বামীজি নিজেই নানা ধরনের চা পান করতেন। এমনকী সেই সময় বেলুড় মঠে চায়ের প্রচলন করেন তিনি। শুধু চা নয়, তাঁর আইসক্রিম-প্রীতিরও উল্লেখ রয়েছে। এমনকী নিজে হাতে ভাল পোলাও-ও রাঁধতেন তিনি। শোনা যায়, আলু ভাজাও বড়ই প্রিয় ছিল তাঁর। মশলাদার আলু ভাজা ভালবাসতেন স্বামী বিবেকানন্দ।
আরও পড়ুন: কেন সুজিতের বাড়িতে ইডি, রয়েছে ‘বড়’ কারণ! তাপসের অফিসেও মহিলা অফিসারের তল্লাশি
লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক যখন চা বানিয়েছেন…
এমনিতে টি-পার্টি সংক্রান্ত নানা গল্প আমাদের সামনে আসে। কিন্তু এমন একটা টি-পার্টি বা চায়ের আসর হয়েছিল, যা ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে। এই চায়ের আসরের আয়োজন হয়েছিল বেলুড় মঠেই। আসলে স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে কিছু বিষয়ে আলোচনা করতে কলকাতায় এসেছিলেন লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক। সেই সময় তাঁর কাছে চা বানানোর অনুরোধ জানান স্বামী বিবেকানন্দ। তখনই সেখানে উপস্থিত সকলের জন্য একটা দুর্দান্ত মুঘলাই চা বানিয়েছিলেন তিলক। সেই চায়ে লবঙ্গ, এলাচ, জাফরানের মতো সুগন্ধী মশলা ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, ‘আহারে-আহারে বিবেকানন্দ’ নামে বইয়ে উল্লেখ রয়েছে যে, নরেন্দ্রনাথের বাড়ির কাছে বিক্রি হত কচুরি-তরকারি। ছেলেবেলায় সেখানে খেতে ভালবাসতেন তিনি। আবার বিদেশ সফরকালে খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতেন তিনি। এমনকী সেখানে ভারতীয় খাবারের বিকল্পও খুঁজতেন। স্বামী বিবেকানন্দের সহযোগীদের লেখা কয়েকশো চিঠির উপর ভিত্তি করে ইতিহাসবিদ শঙ্কর এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করেছেন।