হতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ী: ৮ এপ্রিল, ১৯৯০ সালে অরবিন্দ কুমার গুপ্তার ঘরে জন্ম ডা. সুমন্ত গুপ্তার। প্রাথমিক শিক্ষা মুহম্মদাবাদ গোহনায়। তিনি বলদেব দাস মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং টাউন ইন্টার কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ছাত্রাবস্থা থেকেই তাঁর ব্যবসার প্রতি ঝোঁক ছিল। তিনি ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। তবে, ২০১০ সালে রচনা গুপ্তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তাঁর জীবন এক নতুন মোড় নেয়।
advertisement
ভালবাসা পেতে চিকিৎসক হলেন: বাড়িতে যখন তাঁর সম্পর্কের কথা বলেছিলেন, বাবা অরবিন্দ গুপ্তা খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। তিনি সুমন্তকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন যে যদি পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতেই হয়, তবে তাঁকে প্রথমে ডাক্তার হতে হবে। বাবা এমবিবিএস সম্পন্ন করার শর্ত রেখেছিলেন। প্রেমের উন্মাদনা সুমন্তকে তাঁর পথ পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছিল। ব্যবসায়িক স্বপ্ন সরিয়ে রেখে তিনি ডাক্তার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
৬ বছরের কঠোর পরিশ্রম: ২০১২ সালে সুমন্ত এমবিবিএস পড়ার জন্য লখনউয়ের কেজিএমইউতে ভর্তি হন। ছয় বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর তিনি ২০১৮ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৯ সালে তিনি স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্য নয়াদিল্লির সঞ্জয় গান্ধি মেমোরিয়াল হাসপাতালে যান। স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি ২০২২ সালে নয়াদিল্লির ভগবান মহাবীর হাসপাতালে প্র্যাকটিস শুরু করেন। ২০২৩ সাল থেকে তিনি মুহম্মদাবাদ গোহনার কেশরী রাজ হাসপাতালে প্র্যাকটিস করছেন, বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির আয়োজন করছেন।
নিয়তির পরিহাস: ডাক্তার হওয়ার পর তিনি ২০১৭ সালে প্রেমিকা রচনা গুপ্তাকে বিয়ে করেন। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে ২০২৪ সালে সন্তান প্রসবের সময় রচনা মারা যান। মেয়েটির পরিবার সুমন্তের সঙ্গে এর পর রচনার বোনের বিয়ে দেয়।
ডাক্তার হয়ে মানুষকে সাহায্য: ডা. সুমন্ত বলেন যে, ব্যক্তিগত কারণে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা তাঁর মধ্যে জন্ম নিলেও,রোগীদের সেবা করা এখন তাঁর প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, “ঈশ্বর আমাকে এই জ্ঞান এবং ক্ষমতা দিয়েছেন, তাই এটি আমার কাছে সীমাবদ্ধ রাখা ভুল হবে। যাঁরা চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারেন না তাঁদের আমি সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করব।”
ডা. সুমন্ত গুপ্তা মাঝে মাঝেই বিনামূল্যের চিকিৎসা শিবিরে অংশগ্রহণ করে হাজার হাজার রোগীর সেবা করেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে মানুষের আস্থা তাঁর সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাঁর ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে, কিন্তু সমাজ একজন সংবেদনশীল এবং নিবেদিতপ্রাণ ডাক্তার পেয়েছে।
