সেই সম্পর্কের মর্যাদা রক্ষার ছবি বার বার দেখা যায় নানা ভাবে। ঠিক যেমন গুজরাতের সুরেন্দ্রনগরে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রতাপ সিং রেভার হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই। সেই পরিস্থিতিতে ভাইয়ের পাশে এসে দাঁড়ান তাঁর বোন সরোজবেন লিম্বাড়।
আরও পড়ুন: ১৪ শতাংশ বড় চাঁদ! রাখি পূর্ণিমার রাতে চোখ থাক আকাশে
advertisement
আহমেদাবাদের ইনস্টিটিউট অফ কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে (আইকেডিআরসি), নিজের একটি কিডনি দান করেছেন সরোজবেন। তার জোরেই আরও একবার সুস্থ ভাবে বাঁচার সুযোগ পেয়েছেন প্রতাপ।
তবে সরোজবেন একা নন। হিসেব বলছে শুধু আহমেদাবাদেই গত পাঁচ বছরে ২৪ জন মহিলা তাঁদের ভাইদের জীবন রক্ষা করেছেন কিডনি দানের মাধ্যমে। আসলে ভাই-বোনের মধ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা অনেকটাই সহজ হতে পারে।
সুরেন্দ্রনগরের বাসিন্দা ৩৪ বছরের প্রতাপ সিং রাভার গত ২০১৫ সালে টাইফয়েডে আক্রান্ত হন। সেই সময়ই তাঁর দু’টি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানা যায়। সে কথা পরিবারকে জানানি প্রতাপ। ক্রমাগত ডায়ালিসিস করিয়ে যান। কিন্তু চার বছরের মধ্যে তাঁর স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি হয়। চিকিৎসকরা কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়া আর কোনও পথ নেই বলে জানিয়ে দেন।
প্রাথমিক ভাবে প্রতাপের বাবা-মা কিডনি দানের কথা বলেন। কিন্তু বার্ধক্যজনিত কারণে সেটা সম্ভব ছিল না। প্রতাপের মা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ঠিক সেই সময় প্রতাপের বড় বোন সরোজবেন লিম্বাড় তাঁর কিডনি দান করার সিদ্ধান্ত নেন।
সরোজের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরাও। করদিয়া রাজপুত সম্প্রদায়ের গর্ব হিসেবে সরোজকে সম্মানিতও করা হয়। আসলে এই সমাজে সরোজই প্রথম অঙ্গদানের মতো পবিত্র কাজ করলেন।
প্রতাপ সিং রাভার বলেন, ‘দিদি এক মুহূর্ত ভাবেনি সিদ্ধান্ত নিতে। আমরা চার ভাইবোন। ছোটবেলা থেকেই আমাদের মধ্যে খুব টান। কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারি না।’
যদিও অঙ্গদান করা নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে চান না সরোজবেন। ভাইয়ের জীবন রক্ষা করার জন্য অঙ্গদান করে তিনি নিজের কর্তব্য পালন করেছেন বলেই মনে করেন। সরোজ বলেন, ‘প্রথমে একটু আতঙ্ক ছিল। তবে আমার পরিবার আমার পাশে ছিল।’