মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার কয়েক মাস আগের ঘটনা। রিচার্ড রিড নামে এক ব্যক্তি প্যারিস থেকে আমেরিকান এয়ারলাইনসের ৬৩ নম্বর বিমান ধরেছিলেন। ওই বিমানটির গন্তব্য ছিল মায়ামি। প্যারিস থেকে টেক-অফের সময় রিচার্ড রিডের উপর তল্লাশি চালানো হয়। তবে তার কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির বাজার কাঁপাচ্ছে এই পাঁচ মডেল! দুর্দান্ত বিক্রি, ঠকবেন না কিনলে
advertisement
বিমানটি ওড়ার কিছউ পরেই বিমানকর্মীরা লক্ষ্য করেন যে, নিজের জুতোয় কিছু একটা করছে রিচার্ড রিড। এমনকী তার পাশে বসে থাকা যাত্রীও সেই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তবে উল্টে তাঁকে হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে দেয় রিচার্ড। এরপর নিজের জুতো নিয়েই খোঁচাখুঁচি করতে থাকে সে। এদিকে রিচার্ডকে বাধা দেন অন্যান্য যাত্রী এবং বিমানকর্মীরা। সন্দেহের বশে তাকে পাকড়াও করে।
বিপদ বুঝে সঙ্গে সঙ্গেই বস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরিকালীন অবতরণ করানো হয় ৬৩ নম্বর বিমানটিকে। সেখানে নিরাপত্তা আধিকারিকরা রিচার্ডকে হেফাজতে নেয়। এমনকী তার জুতো নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শুরু হয়। এরপর তদন্তকারীরা যা দেখেন, তাতে তাঁদের মাথআ রীতিমতো ঘুরে গিয়েছিল। আসলে রিচার্ডের জুতোর তলায় বিস্ফোরক ঠাসা ছিল। যা বিমানের মেঝেতে একটা ছিদ্র সৃষ্টি করত। আর এর ফলে ভেঙে পড়ত বিমানটি।
পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, রিচার্ডের জুতোর মধ্যে ১০ আউন্সেরও বেশি বিস্ফোরক ঠাসা ছিল। এফবিআই সংস্থা যখন রিচার্ডকে প্রশ্ন করে, তখন তদন্তকারীদের সে জানায় যে, সে নিজেই ওই জুতোটি তৈরি করেছিল। ঘাতক এই জুতোর ক্ষমতা দেখে এফবিআই সেটির নাম দেয় বম্বার শ্যু বা বোমারু জুতো। সন্ত্রাস সম্পর্কিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবেও সেই জুতো ব্যবহার করছে তারা।
২০০২ সালের ৪ অক্টোবর রিচার্ডকে সন্ত্রাসবাদের আটটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। একজন বিচারক তাকে ফেডারেল জেলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিলেন। এমনকী তদন্তকারী সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আজও রয়েছে সেই বোমারু-জুতোটি। আর সেটি দেখিয়েই দেওয়া হয় প্রশিক্ষণ। সেই সঙ্গে আজও বাইরের দেশগুলিতে যাত্রীর সঙ্গে থাকা মালপত্রের সঙ্গে বিশেষ ভাবে পরীক্ষা করা হয় তাঁদের জুতোও।