সন্তকবীরনগর, উত্তর প্রদেশ: স্বামী আর দুই সন্তান নিয়ে সুখের সংসার। কিন্তু প্রেম সব তছনছ করে দেয়। স্ত্রী রাধিকার ভালবাসা দেখে চুপ করে বসে থাকেননি বাবলু। অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নেন। প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রীর বিয়ে দিয়ে দেন তিনি। উত্তর প্রদেশের সন্তকবীরনগরের এই ঘটনায় হইচই পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ঘটনাই এবার নতুন দিকে মোড় নিল।
advertisement
বিকাশ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। তাঁর প্রেমেই হাবুডুবু খাচ্ছিলেন দুই সন্তানের মা রাধিকা। লুকিয়ে দেখাও করতেন তাঁরা। এভাবেই চলছিল। কিন্তু একদিন সব জানতে পারেন বাবলু। তারপরই স্ত্রীর সঙ্গে বিকাশের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গ্রামেরই একটি মন্দিরে বিয়ে হয় তাঁদের। বাব্লু নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের হাতে তুলে দেন। তবে সন্তানদের নিজের কাছেই রেখে দেন তিনি।
নতুন স্বামীর সঙ্গে কয়েকদিন কাটান রাধিকা। কিন্তু প্রথম স্বামী আর সন্তানদের ভুলতে পারেননি। শয়নে স্বপনে তাঁদের কথাই চিন্তা করতেন। এদিকে বাবলুরও একই অবস্থা। ব্যাপারটা চোখ এড়ায়নি বিকাশের মায়ের। নববিবাহিতা বৌমার দুর্দশা ও প্রথম স্বামীর কষ্ট দেখে তিনি রাধিকাকে ফের পুরনো স্বামীর কাছেই ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
বিকাশকে পুরো বিষয়টা বুঝিয়ে বলেন তিনি। জানান, দুটো মানুষকে এভাবে কষ্ট দেওয়া উচিত হচ্ছে না। তাছাড়া তাঁদের সন্তানদের কথাও ভাবা উচিত। এরপরই গ্রামের মাতব্বরদের ডাকা হয়। তাঁরা সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেন, রাধিকাকে তাঁর পুরনো স্বামীর কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া হোক। বাবলুই এখন থেকে স্ত্রীর দেখাশোনা করবেন। বাবলুও রাজি হন। পঞ্চায়েতের সামনে শপথ নিয়ে বলেন, তিনি স্ত্রীকে গ্রহণ করবেন। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে রাধিকার সঙ্গে যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তার দায়ভারও তাঁরই।
বাবলুর এই সিদ্ধান্তে গ্রামবাসীরা খুশি। ভাঙা সংসার আবার জোড়া লাগবে। এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে! বাবলুর মানসিকতার প্রশংসা করছেন তাঁরা। একইসঙ্গে বিকাশের মা যে সহানুভূতি দেখিয়েছেন, তারও মুক্তকন্ঠে প্রশংসা করেছেন অনেকেই। তাঁরা বলছেন, সন্তানের প্রেমকে বলি দিতে ক’জন মা পারেন?
সম্প্রতি মেরঠে মুসকান রাস্তোগীর ঘটনা সামনে এসেছে। প্রেমিকের সঙ্গে যোগসাজসে স্বামীকে খুনের পর কুচি কুচি করে কেটেছিলেন তাঁরা। সেখানে বাবলুদের এই ঘটনা অনেকটা সিনেমার মতো। শুধু কষ্ট বা বেদনা নয়, দয়া এবং মানবিকতা থেকেও যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, এই ঘটনা যেন তারই নজির হয়ে থাকল।