রোহতক: কথায় আছে, চিকিৎসকরাই পৃথিবীতে ঈশ্বরের রূপে বিরাজ করেন। আর এই কথাটাকেই আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন হরিয়ানার রোহতকের চিকিৎসকেরা। আসলে রোহতক-পিজিআই-এ এসেছিলেন এক মহিলা। তিনি জানান যে, পেটে একটা ভার বোধ হচ্ছে তাঁর। রোগিণীর কথা শুনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন চিকিৎসকরাও। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন যে, এটা হয়তো একটা ছোটখাটো সমস্যা। কিন্তু ওই মহিলাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রীতিমতো চমকে যান চিকিৎসকরা। জেনে নেওয়া যাক পুরো বিষয়টা।
advertisement
পণ্ডিত ভগবত দয়াল শর্মা পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের নাম আবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র প্রফেসর গাইনিকোলজি এবং ওবস্ট্রেটিক্স ডিপার্টমেন্ট ডা. সবিতা সিঙ্ঘল এবং তাঁর টিম ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ৮ কেজি ওভারিয়ান টিউমার অস্ত্রোপচার করে রোগিণীকে নতুন জীবন দিয়েছেন তাঁরা।
আল্ট্রাসাউন্ডে ধরা পড়ল সমস্যা:
আসলে জিন্দের বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী এক মহিলা হাসপাতালে পৌঁছে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর পেটে ভার বোধ হচ্ছে। এর আগে অন্যান্য জায়গাতেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও সুরাহা পাননি। সেই কারণে জিন্দের সরকারি হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তাঁকে পিজিআইএমএস-এ রেফার করা হয়েছিল। এরপর আল্ট্রাসাউন্ড করার পরেই সত্যিটা সামনে আসে।
টিউমারের আকার:
ওই মহিলার পেটে ছিল বিশালাকার একটি টিউমার। যার মাপ ছিল ৪২ ইঞ্চি ৪০ সেন্টিমিয়ার। অস্ত্রোপচার করার জন্য প্রস্তুতি ছিল সারা। তিন ঘণ্টা ধরে চলেছিল সেই অস্ত্রোপচার। এরপর প্রায় আট কিলো ওজনের টিউমারটি বাদ দেওয়া হয়েছে রোগিণীর শরীর থেকে।
চিকিৎসকদের দলের প্রশংসা:
গাইনিকোলজি ও ওবস্ট্রেটিক্স বিভাগ এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সমস্ত ডাক্তারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ভাইস চ্যান্সেলর ডা. এইচকে আগরওয়াল, ডিরেক্টর ডা. এসকে সিঙ্ঘল এবং মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডা. কুন্দন মিত্তল। রোগিণীকে নতুন জীবন দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ডা. সবিতা সিঙ্ঘলের টিম। তাঁরা নিজেদের দক্ষতা এবং ডেডিকেশনের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগও:
ডা. মনিকা দালাল বলেন যে, এত বড় টিউমার জীবনে প্রথম দেখলেন তিনি। অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের ডা. শিখা মদন, ডা. প্রেরণা, ডা. রেণু বালা এবং ডা. ময়ূরীও এই অস্ত্রোপচারে অংশ নিয়েছিলেন। অস্ত্রোপচার যথেষ্ট জটিল ছিল। কারণ সেই সময় রোগিণীর রক্তচাপ কমছিল। আর হার্টবিটও ওঠা-নামা করছিল। এই পরিস্থিতিতে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগ বিশেষ ভাবে পাশে ছিল। আপাতত সুস্থ হচ্ছেন রোগিণী। এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে।