গ্রামে ফিরে রাম মিলনের অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। অভিযোগ, পড়ুয়াদের স্টাডি ভিসা দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে ১৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় এক আইইএলটিএস অপারেটর। আর তার খপ্পরেই পড়েছে রাম মিলনের মতো পড়ুয়াও।
advertisement
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পিলিভিটের গজরৌলা থানার লালপুর গ্রামের বাসিন্দা রাম মিলন। তাঁর অভিযোগ, পুরানপুর নগর সুপার মার্কেটে এক আইইএলটিএস অপারেটর তাঁকে অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে পাঠানোর জন্য স্টাডি ভিসা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁর থেকে পাসপোর্ট, নথিপত্র এবং ১৮ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। ওই তরুণ আরও জানান, এত পরিমাণ অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিল তাঁর পরিবারের। কোনও রকমে জমি, বাড়ি, ট্র্যাক্টর এবং বাড়ির সকলের গয়না বন্ধক দিয়ে কোনও রকমে লোনের মাধ্যমে ১৮ লক্ষ টাকা জোগাড় করেন রাম মিলনের বাবা। এরপর সেটি স্টাডি ভিসা নিয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানকার আধিকারিকরা ভিসা পরীক্ষা করে তাঁকে জানান যে, সেটা ভুয়ো ভিসা। ফলে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে খালি হাতেই রাম মিলনকে গ্রামে ফিরে যেতে হয়েছিল। ফলে ফিরে গিয়ে ওই অপারেটরের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন তিনি। কিন্তু সে ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে এবং ঝামেলাও হয়। এরপর প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে রাম মিলন পুরানপুর কো অফিসে পৌঁছন। ওই অপারেটর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার এবং তাঁর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ আধিকারিকের কাছে আর্জি জানান রাম মিলন।
তাঁর বাবা যশরথ বলেন, “অভিযুক্ত অপারেটর আমার ছেলেকে বিদেশে পড়শোনার জন্য পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কত টাকা লাগবে জানতে চাইলে সে জানায়, ১৮ লক্ষ টাকা লাগবে। আর সেই অর্থ জোগাড় করতে আমি আমার জমি বিক্রি করে দিই। এমনকী
‘‘গয়নাগাঁটি বন্ধক রাখতে বাধ্য হই। কিছু টাকা ধার করি। এভাবে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা জোগাড় হয়। অথচ ওই অপারেটর একটি ভুয়ো ভিসা ধরিয়ে দিয়েছে। আমাদের ছেলেকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসতে হয়।”
রাম মিলনের কথায়, “আমরা আইইএলটিএস-এর মাধ্যমে ভিসার আবেদন করেছিলাম। অভিযুক্ত জানিয়েছিল এতে ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। কোনওক্রমে আমরা সম্পত্তি বেচে আর বন্ধক রেখে ওই টাকাটা জোগাড়ও করি। এরপর আমাদের ভিসা দেয়। আর টিকিটও পাই। কিন্তু দিল্লিতে পৌঁছনোমাত্রই সেখানে আমায় আটকে দেন অফিসারেরা। ফলে সেখান থেকে গ্রামে ফিরে পঞ্চায়েত বসানো হয়। আর পঞ্চায়েতে অভিযুক্ত জানায় যে, সে ওই টাকা আমায় ফেরত দেবে। কিন্তু যখন আমরা টাকা ফেরত নিতে যাই, তখন সে আমাদের ভয় দেখায় এবং হুমকি দেয়। ফলে বাধ্য হয়েই আমরা বিচারের জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছি।”