মুখে একগাল দাড়ি। কাঁধ পর্যন্ত ঝাঁকড়া চুল। লম্বা দোহারা চেহারা। যুবকের চোখেমুখে এক অদ্ভুত প্রশান্তি লেগে রয়েছে। সবসময়ই হাসছেন। যেন পৃথিবীর কোনও মলিনতা স্পর্শ করতে পারছে না তাঁকে। মাসানি এসেছেন মহাকুম্ভে। মকর সংক্রান্তিতে পুণ্য স্নান করবেন, এই বাসনা। তবে তাঁর পূর্ব পরিচয় চাপা থাকেনি। মাসানির তাঁবুর বাইরে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। সকলেই একবার ‘আইআইটি বাবা’-কে চোখের দেখা দেখতে চায়।
advertisement
আরও পড়ুন– মহাকুম্ভের আসরে তাঁকে দেখে হইচই পড়ে গিয়েছে ! কে এই হর্ষা? সত্যিকারের সাধ্বী না অন্য কেউ
অভয় ওরফে মাসানির বাড়ি হরিয়ানায়। আইআইটি বম্বেতে চার বছর পড়াশোনা করেছেন। এরপর চলে যান আর্টসে। ডিজাইনে মাস্টার্স করেন। কিছুদিন ফটোগ্রাফিও করেছেন। একসময় ফিজিক্স পড়াতেন। দর্শন শাস্ত্রেও গভীর অনুরাগ ছিল। কোর্সও করেছেন। পোস্ট-মডার্নিজম, সক্রেটিস এবং প্লেটোকে চিনেছেন খুব কাছ থেকে। আইআইটি বাবার মতে, “জীবনকে গভীরভাবে বোঝার জন্য এটা জরুরি ছিল।”
বরাবর নিজের শিকড়ে ফিরতে চেয়েছেন মাসানি। এও এক সাধনা। এখান থেকেই জীবনের “মৌলিক বিষয়”-গুলি তাঁর মনোযোগ টানতে শুরু করে। আগ্রহ জন্মায় আধ্যাত্মিকতায়। অভয় নিজের নাম বদলে রাখেন মাসানি গোরখ। ঠিক করে নেন, মহাদেব শিবের শ্রীচরণেই জীবন উৎসর্গ করবেন।
নিউজ18-কে ‘আইআইটি বাবা’ বলেন, “এখন আমি বুঝি, এটাই আসল জ্ঞান। বাকি সবই অকাজের। যদি মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বলেন, তাহলে আধ্যাত্মিকতাই এর সবচেয়ে বড় মাধ্যম হতে পারে।” অন্যরা তাঁর সম্পর্কে কী ভাবছে তাতে আর কিছু যায় আসে না তাঁর। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, কীভাবে এই পর্যায়ে পৌঁছলেন? মুখের অমলিন হাসিটি বজায় রেখে আইআইটি বাবা শুধু বললেন, “এটাই জীবনের শ্রেষ্ঠ পর্যায়।”
আইআইটি বাবার এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যুবকের প্রশংসা করছেন অনেকেই। নেটিজেনরা বলছেন, টাকাপয়সার পিছনে না ছুটে জ্ঞানের পথ বেছে নিয়েছেন, এমন ঘটনা এই যুগে বিরল। এক ইউজার লিখেছেন, “মহাবিশ্বের সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকার পরেও শূন্যতা একইরকম থাকে। সেটাই শিব, চিরন্তন সত্য। এর জীবন্ত উদাহরণ আমাদের আইআইটি মহারাজজি।”
আরেক ইউজার লিখেছেন, “কথা শুনে মনে হচ্ছে, ইনি সৎ এবং ভাল মানুষ। কিছু পাওয়ার লোভ নেই।” আরেকজন লিখেছেন, “আইআইটি বম্বে দেশের অধিকাংশ যুবকের কাছে স্বপ্নের মতো। বাবাজি আপনি অসাধারণ। আপনাকে কিছু বলার মতো ভাষা নেই।”