মেরঠ, উত্তর প্রদেশ: সোশ্যাল মিডিয়ার বিবাদ ঠিক কত দূর পর্যন্ত যেতে পারে? আমরা প্রায়ই কেউই এমন নেই যাদের সঙ্গে কোনও পোস্ট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়নি। হয় সেই পোস্ট নিজের, অন্য পক্ষের কমেন্ট মেনে নিতে না পেরে ঝগড়া শুরু হয়েছে। অথবা, বন্ধুর পোস্টে কারও মন্তব্যকে কেন্দ্র করে চলেছে বাদ-বিবাদ। বিষয়টা সেখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, ঘটনা যখন সোশ্যাল মিডিয়ার। কিন্তু সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মেরঠের একটি ঘটনা আবার প্রমাণ করে দিল যে সোশ্যাল মিডিয়া এবং সামাজিক জীবনের সীমারেখা আর অক্ষুণ্ণ থাকতে পারছে না।
advertisement
জানা গিয়েছে যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাদানুবাদের জেরে গুলি চলেছে। ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের মেরঠের। মেরঠের সরধানার কালান্দ গ্রামে এই গুলি চলার ঘটনার জেরে প্রাণ গিয়েছে এক ৮ বছর বয়সের মেয়ের, যার সঙ্গে এই সবের কোনও সম্পর্কই নেই!
মেরঠের সরধনার কালান্দ গ্রামে রবিবার রাতে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে ৯ সশস্ত্র ব্যক্তি। ওই বাড়িটি গ্রামের বাসিন্দা তহসিনের। জানা গিয়েছে যে গ্রামে তহসিনের একটি ডেয়ারি রয়েছে। তাঁর ছেলে সাহিলের সঙ্গে একই গ্রামের মাশরুরের সঙ্গে ২ বছর ধরে শত্রুতা চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরকে নিয়ে করা মন্তব্য নিয়েই দুজনের মধ্যে বিরোধ চলছে। বছরখানেক আগেও দু’জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। এর পর বিষয়টি আর শুধু ঝগড়ায় থেমে থাকেনি, তা নিয়ে মামলাও হয়। এই দুই বছরের পুরনো মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন বলে জানা গিয়েছে।
ফলে, সাহিল এবং মাশরুরের মধ্যে তিক্ততা বেড়েছে বই কমেনি! এরই মধ্যে রবিবার রাতে এই দ্বন্দ্ব নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করে। বলা হচ্ছে যে রবিবার সন্ধ্যায় সাহিল এবং মাশরুর আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরকে গালিগালাজ করেন। এরই শোধ তুলতে আরও ৮ জনের সঙ্গে রিভলবার নিয়ে রবিবার রাতে তহসিনের বাড়িতে পৌঁছে যায় সাহিল। সেই সময়ে তহসিন, সাহিল এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা খেতে বসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
তহসিন, সাহিল এবং তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের আত্মরক্ষার কোনও সুযোগ না দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এর পরেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় মাশরুর সহ অন্য দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় গুলি লাগে সাহিলের ৮ বছর বয়সের বোনের, তার নাম আফিয়া। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে আফিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এই প্রসঙ্গে মেরঠের এসপি ক্রাইম অবিনাশ কুমার বলেছেন যে কালান্দ গ্রামে দুটি পরিবারের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছে। রবিবার দুই পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদের ঘটনা ঘটে। এতে একটি ছোট মেয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। সে মারা যায়। এই বিষয়ে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং পুলিশের একটি দল ক্রমাগত তদন্ত অভিযান চালাচ্ছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।