এখানকার ল্যাংড়া আম আবার ‘বেনারসি ল্যাংড়া’ নামেও পরিচিত। এই আম আসলে অনন্য সুবাস এবং অপূর্ব সুমিষ্ট স্বাদের জন্যই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর মজার বিষয় হল, এই বেনারসি ল্যাংড়া আম অন্যান্য আমের তুলনায় আলাদা, কারণ তা পেকে যাওয়ার পরেও সবুজ থাকে। উত্তরপ্রদেশের সাহারণপুরে বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত হয় ল্যাংড়া আম। আর তা দেশে এমনকী বিদেশেও রফতানি করা হয়। যদিও বেনারস (বর্তমান বারাণসী)-এ ল্যাংড়া আমের ফলনের ইতিহাস প্রায় ২৫০-৩০০ বছরের পুরনো।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ট্রেনে যাওয়ার সময় বাড়ির খাবার নিয়ে যান? এবারে কিন্তু সাবধান…এই ভুল করবেন না, বড় সমস্যায় পড়বেন
কিন্তু এই আমের এমন নামের কারণটা ঠিক কী? আর এই নামের পিছনে থাকা মজাদার গল্পটি ভাগ করে নিলেন সাহারণপুরের জৈব কৃষক আচার্য রাজেন্দ্র অটল। তাঁর মতে, ল্যাংড়া আমের ইতিহাস অনেকটাই পুরনো। বলা হয় যে, প্রাচীন সময়ে বেনারসের একটি শিব মন্দিরে বসবাস করতেন এক পুরোহিত। তাঁর পায়ের কিছু সমস্যা ছিল। ফলে স্থানীয়রা তাঁকে ‘ল্যাংড়া পূজারী’ বলেই ডাকতেন।
এরপর নিজের আশ্রমে একটি আম গাছ বসিয়েছিলেন সেই পূজারী। কিন্তু আমের মরশুমে আম পাড়তে আসত বাচ্চারা। আর ঢিল ছুড়ে আম পাড়তে গেলেই একটি লাঠি নিয়ে তাড়া করতেন ওই পূজারী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আশ্রমের ওই গাছের আম স্থানীয় এলাকায় খ্যাতি লাভ করে। এর নাম দেওয়া হয় – ‘ল্যাংড়া ওয়ালা আম’। অর্থাৎ ল্যাংড়া পূজারীর আশ্রমের গাছের আম।
এই আমের খ্যাতি এক সময় এলাকার রাজার কানে গিয়ে পৌঁছয়। কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে রাজদরবারেও আম নিয়ে আসেন রাজা। আর মুখে দিতেই যেন ম্যাজিক। সেই আমের মিষ্টি স্বাদ মুগ্ধ করে রাজাকেও। সেই ল্যাংড়া পূজারীকে সম্মান দিতে সেই আমের নামকরণ করে দেন – ‘ল্যাংড়া আম’। এরপর আশ্রমের সেই আসল গাছটি থেকে আরও অনেক আম গাছ রোপণ করেন রাজা। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এভাবেই নাম এবং পরিচিতি পায় স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় ল্যাংড়া আম। যা আজও সেই অপূর্ব স্বাদের ধারা বজায় রেখেছে।