ঝাড়খণ্ড: নবজাতককে কোলে নিয়ে প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছেন এক যুবতী। তাঁকে প্রেমিক ধোঁকা দিয়েছে। এই অন্যায়ের বিচার চান তিনি। তাই গত ১০ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়ির সামনেই বসে রয়েছেন, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত নড়বেন না।
ঝাড়খণ্ডের মেরাল থানার দেবগানা গ্রামের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যুবতীর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গাড়োয়া জেলায়। এদিকে যুবতী আসা মাত্রই সপরিবারে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেমিক। বাড়ির দরজায় তালা ঝুলছে। কিন্তু যুবতী নাছোড়। নিজের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত তিনি এখান থেকে এক পা-ও নড়বেন না।
advertisement
ওই যুবতীর নাম রেখা। ধুরকি ব্লকের টাটিডিরি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। রেখা জানিয়েছেন, গত বছর ছট পুজোর সময় তিনি দিদির বাড়ি দেবগানায় গিয়েছিলেন। সেখানেই আলাপ হয় দিদির খুড়তুতো দেবর সুজিত প্রজাপতির সঙ্গে। দু’জনের বন্ধুত্ব হয়। সেখান থেকে প্রেম। উত্তেজনায় অবিবেচকের মতো কাজও করে বসেন। যার ফল আজ তাঁকে ভুগতে হচ্ছে।
রেখার নিজের কথায়, “আমরা বহুবার লুকিয়ে দেখা করেছি। ফোনেও নিয়মিত কথাবার্তা হত। হোলির সময় আমি গর্ভবতী হয়ে পড়ি। সুজিতকে সব জানাই। তখন আমায় বলেছিল, আগে সন্তানের জন্ম হোক, তারপর বাড়িতে সব জানাব। গর্ভপাত যেন না করি।” সেই মতো সন্তানের জন্ম দেন রেখা। কিন্তু সুজিত এখন বেঁকে বসেছেন। তিনি রেখাকে বিয়ে করা তো দূরে থাক, দেখাও করছেন না। এমনকী কথা বলাও বন্ধ করে দিয়েছেন। সম্পর্কচ্ছেদের ইঙ্গিত পেতেই টনক নড়ে রেখার। তিনি বোঝেন, অবস্থা বেগতিক।
এরপর গত সেপ্টেম্বর মাসে গাড়োয়া মহিলা থানায় সুজিতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন রেখা। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, তিন মাস কেটে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর ৫ নভেম্বর তিনি সন্তানকে নিয়ে একেবারে সুজিতের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। তাঁকে দেখেই সুজিত এবং তাঁর পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালান। এখন বাড়িতে তালা লাগানো। তবে হাল ছাড়েননি রেখা। বাড়ির সামনেই সন্তান কোলে ধর্নায় বসেছেন তিনি।
রেখা বলছেন, “এই লড়াইতে যদি জিতি বাড়ির বউ-মেয়ের মতো থাকব। আর যদি হারি, তাহলে জীবন দিয়ে দেব।” মহিলা গোষ্ঠীর ব্লক সভাপতি ববিতা জানান, ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র তিনি রেখার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। তিনি বলেছেন, “রেখা যাতে ন্যায়বিচার পান তা আমরা দেখব।”