সে কথায় আসার আগে ভিডিওতে ঠিক কী দেখা যাচ্ছে, তা না বললেই নয়। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য প্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে, যেখানে একজন কর্মী মা চিতা জ্বালা এবং তার চারটি শাবককে জল পান করিয়েছেন, তা দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে, ওই বনকর্মী একটি জ্যারিকেন থেকে একটি বড় ধাতব পাত্রে জল ঢালছেন এবং তার পর চিতাদের ডাকছেন। চিতারাও সেই ডাকে সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রজেক্ট চিতার (Cheetah) অধীনে নামিবিয়া থেকে যে প্রাণীদের নিয়ে আসা হয়েছে, তাদেরই মধ্যে একটি, মা চিতা জ্বালা, সেই বাটি থেকে জল পান করতে শুরু করে। তার আচরণ বেশ শান্ত এবং বন্ধুত্বপূর্ণ। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে, শাবকগুলোও শীঘ্রই তাদের মাকে অনুসরণ করে জল খেতে শুরু করে দেয়।
advertisement
ভিডিওটি নেটদুনিয়ায় প্রভূত প্রশংসা পেলেও, টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সত্যনারায়ণ গুর্জর নামের ওই ব্যক্তিকে বন বিভাগের একজন চালক হিসেবে তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন বলছে যে, বন দফতরের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করেন যে চিতাগুলো এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের আশেপাশে বিচরণে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। পরের ধাপে তারা আবাসিক এলাকাতেও চলে যেতে পারে, যার ফলে মানুষের উপর আক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
‘‘জল খাওয়ানোর এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপটি মানুষ ও পশুর ক্রমবর্ধমান বোঝাপড়া এবং আচরণের পরিবর্তনের প্রতীক। গ্রামবাসীরা সম্ভবত বুঝতে পেরেছেন যে চিতারা তাঁদের জন্য কোনও হুমকি নয়, বরং অঞ্চলের প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের অংশ, তাই এবার পরিস্থিতি ভিন্নভাবে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু আবারও, আমরা চাই না যে তাঁরা এত ঘনিষ্ঠ হন এবং এই ধরনের কোনও বন্ধন গড়ে উঠুক’’, একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
অ্যাডিশনাল প্রিন্সিপাল চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্টস (APCCF) উত্তম কুমার শর্মা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে চিতাবাঘ এবং তার শাবকগুলো কিছুদিন ধরেই মানুষের বসতির কাছাকাছি চলে আসছে। তিনি আরও বলেন যে, মনিটরিং দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা যেন মানুষ-চিতা সংঘর্ষ এড়াতে পশুদের বনে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
জ্বালা এবং তার শাবকরা গ্রামে এক ডজন ছাগল শিকার করার মাত্র কয়েকদিন পরেই এই ঘটনাটি ঘটে। এই সময়ে গ্রামবাসীদের উত্তেজনার মুখেও পড়তে হয়।