কৈঠাল, হরিয়ানা: আয়েশ করে শিঙাড়া খাচ্ছিলেন দুই যুবক। চাটনিতে ডুবিয়ে সবে প্রথম কামড়টা বসিয়েছেন, তখনই হইচই। কী ব্যাপার? চারপাশে লোক জড়ো হয়ে গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে থেকে একজন এগিয়ে এসে সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন, “কী নাম? কোথা থেকে আসছেন?”
প্রথমে পাত্তা দেননি দুই যুবক। তারপর জানতে পারলেন এঁরা অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো (এসি বি) থেকে এসেছে। শিঙাড়া গলায় আটকে যাওয়ার জোগাড় ! প্রথমে মুখ খুলতে চাননি ওই দুই যুবক। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে আসল সত্যি সামনে আসে। হরিয়ানার কৈথালের এই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছে।
advertisement
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PMAY)- প্রকল্পের ম্যানেজার বিশাল গুপ্ত এবং জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (JE) তরুণ কুমারকে ২৫,০০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো। করনাল রোডের একটি শিঙাড়ার দোকানের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এসি বি ইন্সপেক্টর সুভা সিং জানিয়েছেন, বিশাল গুপ্ত এবং তরুণ কুমার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর জন্য ঘুষ চাইতেন। এই অভিযোগেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, বিশাল গুপ্ত জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার তরুণ কুমারের মাধ্যমে ঘুষ চেয়েছিলেন। অভিযোগকারী জানায়, তাঁদের বলা হয়েছিল, ২৫ হাজার টাকা দিলে তবেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে কিস্তির টাকা ছাড়া হবে। অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নামে এসিবি টিম। দুই আধিকারিককে ধরতে জাল বিছানো হয়। জানা গিয়েছে, ঘুষের টাকা নেওয়ার জন্য করনাল রোডের সানি সমোসা নামের একটি দোকানের সুবিধাভোগীদের ডেকেছিলেন তাঁরা। সেখান থেকেই তাঁদের হাতেনাতে গ্রেফতার করে অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো (এসিবি)।
বিশাল গুপ্তা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ম্যানেজার এবং অতিরিক্ত জেলা কমিশনার (এডিসি) অফিসে কর্মরত ছিলেন। অন্য দিকে, তরুণ কুমার নগর পরিষদ অফিসে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ইনচার্জ হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের কাজ ছিল যোজনার অধীনে সুবিধাভোগীদের সময়মতো অর্থ প্রদান নিশ্চিত করা। কিন্তু অভিযোগ, কিস্তির টাকা দেওয়ার জন্য ঘুষ চেয়ে তাঁরা আইন লঙ্ঘন করেছেন।
ইন্সপেক্টর সুভা সিং আরও জানিয়েছেন, দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দুর্নীতি আইন অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই মামলায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও। সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।