জয়পুর: প্রায় প্রতিদিন একবার করে বিমানবন্দরে যেত যুবক। কিন্তু কেউ জানত না, কেন। সন্দেহ হয় পুলিশের। আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তখনই সামনে আসে আসল ঘটনা। অবাক হয়ে যায় পুলিশ। এভাবেও বড়লোক হওয়া যায়!
বিলাসবহুল জীবন। ব্র্যান্ডেড জামা-জুতো। দামি ঘড়ি, মোবাইল। কিন্তু এত টাকা আসছে কোথা থেকে? যুবকের রোজগারের কৌশল শুনে হতভম্ব পুলিশ। থানায় নিয়ে গিয়ে শুরু হয় আরও জেরা। তাতেই জানা যায়, দুবাইয়ের সাইবার প্রতারণা চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে সে। তাতেই এমন ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
advertisement
বুধবার জয়পুরে অভিযান চালিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করেছে রাজস্থান পুলিশের অ্যান্টি-গ্যাংস্টার টাস্ক ফোর্স। সেই সময়ই সিরসি রোড থেকে যশবন্ত সিং পওয়ার নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।
শাস্ত্রী নগরের গুজ্জর কলোনির বাসিন্দা ওই যুবকের কাছ থেকে ৬১টি সক্রিয় মোবাইল সিম এবং দুটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অ্যাডিশনাল এসপি সিদ্ধান্ত শর্মার নেতৃত্বে এবং হেড কনস্টেবল হেমন্ত শর্মার দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই অভিযান চালায় অ্যান্টি-গ্যাংস্টার টাস্ক ফোর্স।
তদন্তে জানা গিয়েছে, সাইবার প্রতারণা চক্রের আসল পাণ্ডা বসে রয়েছে দুবাইতে। তার নির্দেশই অরুণাচল ও অসম থেকে ভুয়ো নাম, ঠিকানায় ইস্যু করা সক্রিয় সিম সংগ্রহ করত যশবন্ত। তারপর সেগুলো ক্যুরিয়ার মারফত আনত জয়পুরে। সেখান থেকে বিমানে পাঠিয়ে দিত দুবাই। সাইবার প্রতারণায় সেই সিম কার্ড ব্যবহার করা হত।
জানা গিয়েছে, এই সাইবার প্রতারণা চক্রের পাণ্ডার নাম অভিষেক। সে দুবাইতে কল সেন্টার চালায়। কিন্তু সেটা মুখোশ। সাইবার প্রতারণাই তাদের আসল ব্যবসা। বিভিন্ন মোবাইল গেমিং অ্যাপ এবং অন্যান্য পদ্ধতিতে ইউজারদের লুঠ করে তারা।
প্রতারণা চক্রের কাছে ছোট ছোট সিম বক্স রয়েছে। প্রতিটি বক্সে ৩০ থেকে ৪০টি সিম কার্ড লাগিয়ে সক্রিয় করা হয়। ভারতীয় নম্বরের সিম ইনসার্ট করলেই সেগুলো চালু হয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছে যশবন্ত।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, জয়পুরের শাস্ত্রী নগরের বাসিন্দা যোগেন্দ্র খীঞ্চি ওরফে রনি ওরফে রবি, রকি, পঞ্জাবের গুরু, হনুমানগড় জংশনের ইন্দ্র, যতীন ও হরমীত সিংও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ধৃত যুবকের সহযোগীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।