কোমল গুজরাতের বাসিন্দা। আমরেলিতে জন্ম। আর পাঁচটা মেয়ের মতোই সাধারণ জীবন কাটছিল তাঁর। বিয়ে হয়েছিল এক এনআরআই-এর সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। কোমলকে ছেড়ে বর চলে গেলেন নিউজিল্যান্ড। কার্যত বিচ্ছেদ। ভেঙে পড়েছিলেন কোমল। বাবা-মা দূরে থাকেন। নিজের রুটিরুজি যোগাতে স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতার কাজ নেন। বেতন মাত্র ৫ হাজার। সঙ্গে চলতে থাকে ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি। স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই ঠিক করে নিয়েছিলেন, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবেন না।
advertisement
আরও পড়ুন– আকাশপথে ভ্রমণকালে বিমান বজ্রপাতের মুখে পড়লে কী কী হতে পারে? জেনে রাখুন আগেভাগেই
কিন্তু সেই যাত্রাও খুব সহজ ছিল না। পরপর তিনবার ইউপিএসসিতে ব্যর্থ হন কোমল। একদিকে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার অবসাদ, অন্যদিকে পরীক্ষায় ব্যর্থতা। জীবন যেন কোমলের সঙ্গে নির্মম খেলায় মেতেছে। এই সময় পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন কোমলের বাবা। মেয়ের মাথায় মন্ত্রের মতো গেঁথে দিয়েছেন, ‘তুমি বিশেষ, তুমি গুরুত্বপূর্ণ, তুমি জীবনে সবকিছু করতে পারো, তোমাকে অনেক দূর যেতে হবে’। বাবার কথাকেই বেদবাক্য মেনে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন কোমল। ফের বসেছেন ইউপিএসসি। অবশেষে সফল। চতুর্থবারের চেষ্টায় সাফল্য ধরা দিয়েছে তাঁর মুঠোয়।
আরও পড়ুন– ডেঙ্গির মহৌষধী এই ফল, চাহিদা তুঙ্গে ! বিকল্প চাষে দারুণ লাভ পাচ্ছেন উত্তরাখণ্ডের মহিলা
কোমল তিনটি ভাষায় দক্ষ। অনর্গল কথা বলতে পারেন। লিখতে পারেন। তাঁর কথায়, ‘বড় হতে হলে আপনাকে নিজের কমফর্ট জোন ছেড়ে বেরতে হবে। এটাই সাফল্যের বীজমন্ত্র’। বর্তমানে তিনি রেভেনিউ সার্ভিসেসের অফিসার। দিল্লিতে পোস্টিং। গুজরাতের বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট মোহিত শর্মার সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান, তক্ষভি, ৭ বছর বয়স। দাদু-ঠাকুমার কাছে গুজরাতে থাকে। ছুটিছাটায় মোহিতকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়ি যান কোমল। মেয়ের সঙ্গে সময় কাটান। জীবনে আর কী চাই!