বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলে মশার উপস্থিতি আছে, ব্যতিক্রম কেবলমাত্র অ্যান্টার্কটিকা এবং এতদিন পর্যন্ত আইসল্যান্ড। প্রধান কারণ, সেখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়া। এবার মশাগুলি আবিষ্কার করেছেন বিয়র্ন হিয়াল্টাসন (Björn Hjaltason), পশ্চিম আইসল্যান্ডের কিয়োস (Kjós) অঞ্চলের কিদাফেল (Kiðafell) নামক স্থানে, যা রাজধানী রেইকিয়াভিক থেকে প্রায় ২০ মাইল উত্তরে অবস্থিত।
এই আবিষ্কার জলবায়ু পরিবর্তনের একটি সম্ভাব্য ইঙ্গিত হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মোট তিনটি মশা সংগ্রহ করেন—দুটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ। আলফ্রেডসন এগুলোকে চিহ্নিত করেন Culiseta annulata প্রজাতির মশা হিসেবে।
advertisement
আলফ্রেডসন সিএনএন-কে জানান, অনেক বছর আগে এই দেশের কেফলাভিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Keflavík International Airport) একটি বিমানে এক ভিন্ন প্রজাতির একটি মশা পাওয়া গিয়েছিল। এবার আইসল্যান্ডের প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রথমবারের মতো মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেল।”
Culiseta annulata প্রজাতি পূর্ব গোলার্ধের বিস্তৃত অঞ্চলে, উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে উত্তর সাইবেরিয়া পর্যন্ত দেখা যায়। এটি ঠান্ডা পরিবেশে বেশ ভালভাবে মানিয়ে নিতে পারে। আলফ্রেডসনের ভাষায়, এর অন্যতম কারণ হল, বয়স্ক মশাগুলি ঠান্ডার সময়ও থাকতে পারে, এমনকী তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলেও।
মশাগুলি কীভাবে আইসল্যান্ডে পৌঁছেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। একটি সম্ভাবনা হচ্ছে, জাহাজ বা কন্টেইনারের মাধ্যমে এগুলো এসেছে অন্য কোনও জায়গা থেকে। তবে আলফ্রেডসন জানান, এই প্রজাতি আসলেই আইসল্যান্ডে টিকে থাকতে পারে কি না, তা জানতে বসন্তকালে আরও পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি তারা শীতকাল পার করে বেঁচে থাকে, তবে তা প্রজাতিটির আইসল্যান্ডে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের গতি যত বাড়ছে, তাপমাত্রা, ঝড় এবং বন্যাও ততই বাড়ছে—আর এর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মশার বিস্তারও। একের পর এক গবেষণা বলছে, উষ্ণতা বাড়ার ফলে মশার বেড়ে ওঠা দ্রুততর হচ্ছে এবং তাদের আয়ুও দীর্ঘ হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ট্রেনে করেই হচ্ছিল চালান! এক্সপ্রেস থেকে নামতেই ধরা পড়ল ব্যাগভর্তি ‘নিষিদ্ধ’ জিনিস
আইসল্যান্ড জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। দেশটি ইতিমধ্যেই রেকর্ড পরিমাণ গরম অনুভব করেছে। উদাহরণস্বরূপ, চলতি বছরের মে মাসে দেশের কিছু অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ১৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট (প্রায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বেশি ছিল।
