রেওয়ারি: দেশ যে ডিজিটাল হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। একই সঙ্গে, সাইবার অপরাধও যে শতগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটাও আবার অস্বীকার করার জো নেই। হামেশাই খবর আসে যে হোটেল বা ভাড়া বাড়ির ঘরে অভিযান চালিয়ে সাইবার অপরাধীদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। এবারও সেরকমই খবর এল হরিয়ানা থেকে। তফাতের মধ্যে অপরাধীরা সবাই অল্পবয়স্ক, ক্লাস টেন পাশ করা পাঁচ ছেলের দল!
advertisement
ঘটনা হরিয়ানার রেওয়ারির। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেদপ্রকাশ। অভিযোগ, ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁর কাছে একটি কল আসে। সাইবার প্রতারকরা নিজেদের ব্যাঙ্ক কর্মচারী পরিচয় দিয়ে জানায় একটি অ্যাপ ডাউনলোড করলেই সব কাজ ঘরে বসে করা যাবে, ব্যাঙ্কে আর যেতে হবে না। বেদপ্রকাশ ফাঁদে পা দেন, অ্যাপ ডাউনলোড করেন। এর পরেই তাঁর ফোন এবং অন্য ব্যক্তিগত তথ্য হাতে এসে যায় সাইবার অপরাধীদের, সঙ্গে আসে ৫ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা, যা বেদপ্রকাশের অ্যাকাউন্ট থেকে তারা হাতিয়ে নেয়।
এর পরেই নড়েচড়ে বসে রেওয়ারি পুলিশ। রেওয়ারির পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট ড. ময়াঙ্ক গুপ্তা বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি দল গঠন করেন। তার পর দলটি বিহারের পটনায় পৌঁছয়, যেখানে পুলিশ একটি ভাড়া ঘরে থাকা ৫ অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। অভিযুক্তদের মধ্যে ৩ জন বিহারের এবং ২ জন ওড়িশার বাসিন্দা। তাদের কেউ সবে ক্লাস টেন পাশ করেছে, কেউ বা ক্লাস টুয়েলভ। এই অল্প বয়সেই জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে তারা, তাই দিয়ে বেশ ফূর্তিতেই দিন কাটাচ্ছিল।
এদের কাছ থেকে ৩৬টি ব্যাঙ্ক পাসবই, ৫৫টি চেকবই, ৩৫টি অ্যাকাউন্ট কিট, ৯৮টি এটিএম কার্ড, কয়েক ডজন সিম কার্ড এবং মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, যে নম্বর থেকে জালিয়াতি করা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন শহরের সাইবার ক্রাইম পোর্টালে ৮২টি অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। রেওয়ারি এসপিও বলেছেন, তিনি আশা করছেন যে পুলিশি তদন্তে আরও অনেক ঘটনা প্রকাশ পাবে। বর্তমানে গ্রেফতার হওয়া ওই ৫ ছেলেকে আদালতে হাজির করে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের কাছ থেকে যা পাওয়া গিয়েছে তাতে পুলিশ অফিসাররা হতবাক হয়ে গেলেও এসপি কেবল সামান্য হেসেছেন!
রেওয়ারি এসপিও আশাবাদী যে পুলিশ রিমান্ডের পর আরও অনেক অপরাধের রহস্য উদঘাটিত হতে পারে। পুলিশি তদন্তের পরই স্পষ্ট হবে যে এই সাইবার জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে আরও কতজন জড়িত এবং কাদের কাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাইবার জালিয়াতিকারীরা ফাঁকা করে দিয়েছে।