ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের কানপুরের বরায়। এই পর্যন্ত পড়ে অনেকেরই মনে হতে পারে যে যৌতুককে কেন্দ্র করে অশান্তি বেধেছে আর তারই জেরে বেঁকে বসেছেন কনে। এমন খবর হামেশাই পাওয়া যায়। বিয়েকে কেন্দ্র করে পণপ্রথা আইত দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও এখনও তা এই দেশে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। কিন্তু এবার যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা ঠিক টাকার সঙ্গে জড়িত নয়, বরং একে নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করাই উচিত হবে। অন্তত, কনে সেটাই করেছেন।
advertisement
জানা গিয়েছে যে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বরার বিশ্ব ব্যাঙ্ক কলোনির এক যুবকের বিয়ে ঠিক হয়েছিল মন্ধানার এক মেয়ের সঙ্গে। ২৪ নভেম্বর বিয়ের তারিখ পাকা হয়েছিল। বরপক্ষের শর্ত অনুযায়ী বরার জরৌলির বৈষ্ণবী গেস্ট হাউজে সাড়ম্বরে বিয়ের আয়োজন করা হয় কন্যাপক্ষের পক্ষ থেকে। এদিকে, বরকে নিয়ে বাড়ির লোকেরাও স্বজন-বন্ধুদের সঙ্গে বেশ ধুমধাম করে বাজনা বাজিয়ে বারাত নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান। প্রাথমিক পর্বে মালাবদল সম্পন্ন হয় কনে আর বরের। চলতে থাকে বিয়ে এবং সপ্তপদীর প্রস্তুতি।
এরই মধ্যে ঘটে যায় বিপত্তি! জানা গিয়েছে যে এই সময়ে বর কিছুক্ষণের জন্য মণ্ডপে উপস্থিত ছিলেন না। আচমকাই মেয়ের ভাইয়ের নজরে আসে যে গেস্ট হাউজের বাইরে পার্কিং লটে বর অন্ধকারে গাড়ির ভিতরে বসে একটি মেয়ের সঙ্গে মদ খাচ্ছেন। ঘটনা দেখে ভাই আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তিনি উত্তেজিত হয়ে দৌড়তে দৌড়তে কনে যে ঘরে বসে ছিলেন সেখানে পৌঁছন এবং দিদিকে সব খুলে বলেন।
এর পরেই দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। কনে বেঁকে বসেন যে মদ্যপ, চরিত্রহীন পাত্রকে তিনি বিয়ে করবেন না। বাড়ির লোকেরা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। আসলে, যে মেয়েটিকে বরের সঙ্গে গাড়িতে বসে মদ খেতে দেখা গিয়েছে, তিনি অর্কেস্ট্রায় কাজ করেন, বিয়ের জন্য যা খুব সম্ভবত ভাড়া করে আনা হয়েছিল। কনের অসম্মতি বরপক্ষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে, বিয়েবাড়ি অশান্তিতে উত্তাল হয়ে ওঠে।
ঘটনা গড়ায় স্থানীয় থানা পর্যন্ত। উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষ দিতে দিতে থানায় যায়। এর মধ্যে বরপক্ষের অভিযোগ যে তাঁদের আনা লাখ লাখ টাকার গয়না কনে হাতিয়ে নিয়েছেন এবং এখন আর তা ফেরত দিতে চাইছেন না। এই প্রসঙ্গে বরা থানার ইন্সপেক্টর রাজেশ শর্মা জানান যে কোনও পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি, পুলিশ আপোস রফার মাধ্যমে বিবাদের নিষ্পত্তি করেছে। তবে, কনে শেষ পর্যন্ত জেদ ধরে ছিলেন, ফলে বিয়ে ভেঙে দুই পক্ষই নিজেদের বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হয়।