যেমন ভাবা তেমন কাজ। দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা। কিন্তু বুদ্ধি প্রখর। একটা কাজেই জীবন বদলে গেল যুবকের। তাঁকে দেখলে পুলিশের বড় বড় অধিকারিকরাও সেলাম ঠুকত। কোনও বড় শহরে গেলে হইচই পড়ে যেত রীতিমতো। পুলিশ আসত এসকর্ট করতে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। যুবককে গ্রেফতার করেছে গাজিয়াবাদ পুলিশ। তাঁর সঙ্গে আর কে কে জড়িত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শুরু করেছে ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
advertisement
আরও পড়ুন– রাশিফল জানুয়ারি ২০২৫: দেখে নিন এই মাস নিয়ে কী জানাচ্ছেন জ্যোতিষী চিরাগ দারুওয়ালা
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত আনস মালিক জানিয়েছেন, তিনি দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ফোর সিলিংয়ের কাজ করতেন। স্থানীয় নেতাদের বাড়িতেও কাজ করতে যেতেন মাঝেসাঝে। তাঁদের নিরাপত্তারক্ষী, এসকর্ট ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা দেখে তাঁরও এমন লাইফস্টাইলের প্রতি আকর্ষণ জন্মায়।
এরপরই ‘হিউম্যান রাইটস জাস্টিস কমিশন উত্তর প্রদেশ’ নামে একটি ভুয়ো সংস্থা তৈরি করে আনস মালিক। জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভর ছবি দেওয়া লেটারহেড প্রিন্ট করায়। তার নীচে লেখায় ‘হিউম্যান রাইটস কমিশন, আনস মালিক, সভাপতি’। ঠিকানা দেয় লখনউয়ের গোমতী নগর। সরকারি সিলও বানায়। তারপর শুরু করে জালিয়াতির কারবার।
কোনও কাজ করার থাকলে আনস নিজেই চিঠি লিখতেন। সরকারি সিল লাগাতেন। সই করতেন। তারপর সেই চিঠি পাঠিয়ে দিতেন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে। লেটারহেডে ব্যক্তিগত সচিব, স্টাফ কার চালক, পিএসও (পুলিশ সুরক্ষা আধিকারিক)-এর নাম ও ফোন নম্বরও লিখে দিতেন, যাতে কারও সন্দেহ না হয়। তারপর পরিচিতদের সাদা পোশাক পরিয়ে, মাথায় আর্দালির স্টাইলে পাগড়ি বেঁধে লোকজনের সামনে হাজির করতেন।
আরও পড়ুন– জীবন অর্থহীন…‘ছেলে’-কে হারিয়ে শোকে পাথর তৃষা, অভিনয় থেকে নিলেন সাময়িক বিরতি
সরকারি অফিসেও নিজেকে ‘হিউম্যান রাইটস জাস্টিস কমিশনের সভাপতি’ এবং ‘নীতি কমিশনের সদস্য’ বলে পরিচয় দিতেন আনস মালিক। কাজও হয়ে যেত। এমনকী সরকারি অফিসের কর্মীদের কাছ থেকে অন্যায্য সুবিধা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি পুলিশ বিভাগের কনস্টেবল পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। তাঁর অনেক পরিচিতই পরীক্ষা দেন। আনস গুজব ছড়িয়ে দেন যে সে উচ্চ পদে আসীন। সরকারের হোমড়াচোমড়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তিনি সুপারিশ করলে চাকরি হয়ে যাবে। কয়েকজনের কাছ থেকে নথিও নিয়েছিলেন। নিজের জোরে কেউ চাকরি পেলেও আনস সেটাকে ‘তাঁর সুপারিশের গুণেই’ বলে দাবি করে সুযোগসুবিধা নিতেন বলে অভিযোগ।