TRENDING:

Durga Puja 2022|| জমিদারি কেনার পরই পুজো শুরু, জানুন আউশগ্রামের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ইতিহাস

Last Updated:

Durga Puja 2022: জঙ্গলময় আউশগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রাম উত্তর রামনগর। প্রায় ১৩০ বছর আগে বীরভূমের আদিত্যপুর থেকে জমিদারি প্রাপ্তির সূত্র ধরে এই গ্রামে আসে চট্টোপাধ্যায় পরিবার।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#আউশগ্রাম: একটা সময় ব্রাহ্মণ পরিবারের অন্দরে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল তথাকথিত নিচু সম্প্রদায়ের সদস্যদের। কাজের প্রয়োজনে তাঁরা বাড়িতে এলেও, থাকত পৃথক ব্যবস্থা। তাদের জন্য বাহির মহলেই টানা থাকত অদৃশ্য লক্ষ্মণ রেখা। সেই রেখার অন্দরে থাকত শুধুমাত্র তাঁদের জন্যই নির্দিষ্ট আসন, বাসন। খাবার, মাথায় মাখার তেল হাতের তালুতে ঢালা হত অতি সাবধানে। পাছে ছোঁয়া লেগে যায়। পুজোর কাজে তাঁদের অংশগ্রহণ ভাবনারও বাইরে ছিল। নিচু জাতের ছায়া স্পর্শ থেকে বাঁচতে হিন্দু ব্রাহ্মণদের রাস্তার একপাশ ধরে হাঁটার ছবি বারে বারেই ধরা দিয়েছে বাংলা সাহিত্যের বিশাল ক্যানভাসে।
advertisement

সেই তথাকথিত সভ্য বাংলা থেকে শত যোজন দূরে একেবারেই পিছিয়ে পরা পুঁথিগত শিক্ষার আলো না পৌঁছনো বর্ধমানের জঙ্গলমহল কিন্তু সেই লক্ষ্মণরেখা মুছতে পেরেছিল শতবর্ষ আগেই। সেখানে নিচু জাতের স্পর্শ ছাড়া পুজো সম্পূর্ণ হয় না সেই সেদিন থেকেই। আউশগ্রামের জঙ্গলমহলের মিলন মেলায় সবাইকে মিলিয়ে মিশিয়ে দশমী নিশিতে দেবীকুন্ডে অবগাহন করেন মা দুর্গা। জঙ্গলময় আউশগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রাম উত্তর রামনগর। প্রায় ১৩০ বছর আগে বীরভূমের আদিত্যপুর থেকে জমিদারি প্রাপ্তির সূত্র ধরে এই গ্রামে আসে চট্টোপাধ্যায় পরিবার।

advertisement

আরও পড়ুনঃ ৪৫০ বছরের গৌরবের ইতিহাস, জেলার প্রাচীন পুজোর মধ্যে অন্যতম 'বড় বাড়ির পুজো'

চার হাজার বছর আগে ধ্বংস প্রাপ্ত সভ্যতা আজকের পান্ডুরাজার ঢিবির নিচে বসবাসকারী দরিদ্রতম আদিবাসী থেকে শুরু করে খোট্টাদরিয়াপুরের মুসলিম বা দেবীপুরের বেদেমাল সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা তখন রয়েছেন মিলেমিশে। এখানের বাসিন্দারা শান্তিপ্রিয়, কলহবিমুখ এবং বেশিরভাগই ধর্ম নিরপেক্ষ। হাজার হাজার বছর ধরে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে এসে প্রকৃতির কাছ থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছেন তাঁরা। তাই তাঁরাই পারে মৌলবি ডেকে বিয়ের শেষে নববধূকে শাঁখা সিন্দুর পরিয়ে দিতে। খাদ্যে কোনও বাছবিচার নেই। মৃতদেহ মাটির নিচে পুঁতে দেয়। তাকে সমাধি না কবর বলা হবে তা তাঁদের জানা নেই।

advertisement

আরও পড়ুনঃ পুজোর ঢাকে পড়েছে কাঠি, কোচবিহার ডাঙর আই মন্দিরে প্রতিমা তৈরির তোড়জোড়

স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, চট্টোপাধ্যায় পরিবারের দিকে বন্ধুত্বের হাতই বাড়িয়ে দিয়েছিল এখানের এই আদি বাসিন্দারা।  কালাচাঁদ চট্টোপাধ্যায় ও কিরণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জমিদারি কেনার পর টিনের ছাউনির মন্ডপ তৈরি করে দুর্গাপুজো শুরু করেন।শুরুর সে দিন থেকেই পুজো মণ্ডপ সকলের জন্যই উন্মুক্ত। এখানে পুজো হয় পারিবারিক পুঁথি পড়ে। সপ্তমীতে সাত, অষ্টমীতে আট ও নবমীতে ন'রকম ভাজা ভোগ নিবেদন করা হয়। কিছুদিন আগেও দশমীতে কাহারদের সকলকে এক কুইন্টাল চালের ভোগ রেঁধে মন্দির চত্ত্বরে বসিয়ে খাওয়ানো হতো। তবে দশমীর সিঁদুর খেলার পর আজও দেবী ভাসানে যান কাহারদের কাঁধে চেপেই।

advertisement

দেবীকুন্ডের মাঠে যান দেবী। আশপাশের বনেদি বাড়ির প্রতিমাও জমায়েত হয় সেখানে। আদিবাসী, ব্রাহ্মন, মুসলিমরা লাঠিখেলায়, নাচে, আনন্দে উল্লাসে মিলেমিশে একাকার হয়ে যান। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সেই ছবির সামনে একটু একটু করে দেবীকুন্ডে মিলিয়ে যান একচালার সাবেকি প্রতিমা।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুরীর রথ এবার রঘুনাথপুরে, থিমে মন কাড়ছে আপার বেনিয়াসোলের দুর্গাপুজো মণ্ডপ
আরও দেখুন

Saradindu Ghosh

বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
Durga Puja 2022|| জমিদারি কেনার পরই পুজো শুরু, জানুন আউশগ্রামের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ইতিহাস
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল