জাদু করেছে রে আমায় টোনা করেছে।
ঝমে ঝমে ঝঁয় ঝঁয়, ঝমে ঝমে ঝঁয়।”
উপরের লাইনগুলো পড়ে যে কেউ হাসবেন! কিন্তু পরশুরামের গল্পই প্রকৃষ্ট প্রমাণ, গানের প্রতি গবাদি পশুরও টান রয়েছে। হংসেশ্বর রায়ের প্রিয় মোষ রাজমহিষী তো খাওয়াদাওয়া ছেড়েই দিয়েছিল, এই গান শুনেই না ফের পথে এল! কথাটা উঠল, কারণ বর্তমানে পশুপালন সর্বোত্তম লাভদায়ক বিকল্প আয় হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু পশুপালনকারীরা দুধ উৎপাদন নিয়ে চিন্তিত। দুধ বৃদ্ধিতে পশুদের জন্য মিউজিক থেরাপি কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। গরু ও মোষের কাছে গান চালালে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, গবেষণা তা বলছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ মুখ ফুলে দ্বিগুণ, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চোখ…! গুরুতর অসুস্থ প্রেমানন্দ জি মহারাজ, কী হয়েছে তাঁর? জানুন
লোকাল 18 স্পেশ্যালে আমরা পশুদের মিউজিক থেরাপি সম্পর্কে কথা বলব। কেউ কি কখনও ভেবে দেখেছেন, সঙ্গীত কেবল মানুষই নয়, পশুরাও পছন্দ করে? হ্যাঁ, সাম্প্রতিক গবেষণা এবং আয়ুর্বেদ উভয়ই জোর দিয়ে বলেছে, মিষ্টি সঙ্গীত গরু বা মহিষের উপরে ঔষধির মতো প্রভাব ফেলে। আশ্চর্যজনকভাবে, গবাদি পশু গান শোনে তারা বেশি দুধ দেয় এবং চাপমুক্ত থাকে। পুরাণে সঙ্গীতকে ঈশ্বরের রূপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এখন এই ধারণাটি প্রাণীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে মনে হচ্ছে।
বেগুসরাইয়ের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র খোদাবন্দপুরের ডক্টর বিপিনের মতে, গরুর দুধ দোয়ানোর সময় মিষ্টি সঙ্গীতের শব্দ শোনা তার মস্তিষ্কে অক্সিটোসিন হরমোন সক্রিয় করে। এই হরমোন কেবল দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে না, বরং গরুকে আরাম ও শান্তিও প্রদান করে। বিদেশি জাতের তুলনায় দেশি গরুদের মাতৃত্বের অনুভূতি বেশি থাকে। এই কারণেই সঙ্গীত তরঙ্গ তাদের বেশি প্রভাবিত করে। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শব্দের সীমা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭৫ ডেসিবেল পর্যন্ত মিষ্টি সঙ্গীত গরুর জন্য উপকারী, কিন্তু ১০০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ ক্ষতিকারক হতে পারে। এই সময়ে দুধের গুণমান প্রভাবিত হয় এবং চর্বি এবং SNF (কঠিন নন-ফ্যাট) হ্রাস পায়।
কৃষকেরা সাধারণত গরু বা মোষকে এক জায়গায় বেঁধে রাখেন, তা তাদের মধ্যে মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে। কিন্তু যখন তাদের সামনে গান বাজানো হয়, তখন তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং দুধ উৎপাদন স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, মানুষ যেমন তাদের মেজাজ উন্নত করার জন্য গান শোনে, তেমনই গবাদি পশুও সঙ্গীত দ্বারা প্রশান্তি পায় এবং বিনিময়ে আরও বেশি ও ভাল দুধ দেয়।