বারাণসী: সবাই তৈরি। সানাই বাজছে। বর এসে গিয়েছে। কনেও প্রস্তুত। বিয়ের আসর সরগরম। আচমকাই “গাড়ি চাই” বলে হইহল্লা জুড়ে দিলেন বর। আগে গাড়ি দিতে হবে তবেই তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন। সবাই অপ্রস্তুত।
গাড়ি কী ছেলের হাতের মোয়া! কনের বাবা সাফ জানিয়ে দেন, সম্ভব নয়। ব্যস, বর আর ফিরেও তাকাননি। তৎক্ষণাৎ বিয়ের আসর ছেড়ে চলে যান। এমনটাই ঘটেছে বারাণসীতে। এরপরই হাতে ‘বিশাল কি দুলহনিয়া’ লেখা মেহন্দি নিয়ে মনডুয়াডিহ থানায় পৌঁছন কনে। বরের নামে নালিশ ঠুকেছেন তিনি।
advertisement
বারাণসীর চিতিপুরের বিশাল জয়সওয়ালের সঙ্গে ৪ ডিসেম্বর গাজীপুরের ভাদৌরা গ্রামের অজয় কুমার জয়সওয়ালের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়। বারাণসীতেই লজ ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। সেই মতো গাজীপুর থেকে সপরিবারে বারাণসী আসেন অজয়।
বিয়ের দিন আলোর মালায় সাজানো হয় লজ। সন্ধ্যাতেই বরযাত্রী চলে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসেন বর-ও। আর এসেই জোড়েন গাড়ির আবদার। মালাবদলের সময়ও কনেকে ফিসফিস করে কিছু একটা বলেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিয়ে ভেঙে যায়।
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে কনের বাবা অজয় জয়সওয়াল জানিয়েছেন, বিয়ের আগেই বর বিশাল এবং তাঁর বাবা সুরেন্দ্র জয়সওয়াল পণের দাবি করেছিলেন। তা মেনেও নিয়েছিলেন তিনি। অনলাইনে সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা পাঠান। আর নগদে ১২ লক্ষ টাকা দেন। এর সঙ্গে সোনার চেন, আংটিও উপহার হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু এখন তাঁরা বিয়েতে রাজি নয়, টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন– ‘টাকা আমরা দেব’, বিনোদ কাম্বলির পাশে ৮৩-এর বিশ্বকাপজয়ী দল, কিন্তু একটা শর্ত মানতে হবে
কনের বাবা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, “বিয়ে করতে এসেই মেয়ের কাছে গাড়ি চেয়েছিল বিশাল। মেয়ে আমাকে জানালে, আমি বলেছিলাম, এখনই গাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। কোনওরকমে মালাবদল হয়। বিয়ের মূল অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছিল। তখন ফের গাড়ির জেদ ধরে বসে বিশাল। আমি সাফ জানিয়ে দিই, সম্ভব নয়। এটা শুনেই বিয়ের আসর ছেড়ে চলে যায়। আমরা অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু গাড়ি ছাড়া তারা বিয়ে করবে না।”
এমনটা যে ঘটতে পারে এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না কনের। রীতিমতো ঘোরের মধ্যে রয়েছেন তিনি। কোনও রকমে বললেন, “মালাবদলের সময় বিশাল আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘গাড়ির কথা বাবাকে বলেছ?’ আমি ভেবেছিলাম, মজা করছে বোধহয়। পরে বোন এসে বলল, ‘গাড়ি ছাড়া ওরা বিয়ে করতে রাজি নয়।‘এরপরই বিশাল বিয়ের আসর ছেড়ে পালান। আমি অনেকবার ফোন করেছি। শুধু বলছে, ‘পরিবারকে ছেড়ে দাও’। এটা হয় না কি!”