যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সবাই যেন ছুটছে। কারও দু’দণ্ড বসার সময় নেই। কাজ আর কাজ। পরিবার তো দূর অস্ত, শরীরের কথা ভাবারও অবকাশ নেই যেন। ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ভয়াবহ স্বাস্থ্য সংকটের শিকার হয়ে এমনই উপলব্ধি বেঙ্গালুরুর এক উদ্যোক্তার।
শনিবার রাতে ল্যাপটপে কাজ করছিলেন অমিত মিশ্র। বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থার সিইও তিনি। সফল উদ্যোগপতি। কাজ করতে করতে হঠাতই নাক দিয়ে রক্ত বেরতে শুরু করে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে অ্যাপেলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগে প্রায় ২০ মিনিটের চেষ্টায় রক্তপাত বন্ধ করেন চিকিৎসকরা।
advertisement
ঠিক কী হয়েছিল অমিতের? রাতারাতি রক্তচাপ উঠে গিয়েছিল ২৩০-এর কোঠায়। লিঙ্কডইন পোস্টে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন অমিত। তিনি লিখেছেন, “আমাকে সরাসরি আইসিইউতে পাঠানো হয়। সেখানে ডাক্তাররা রক্তচাপ কমানোর চেষ্টা করেন। রাতের দিকে কিছুটা স্বাভাবিক মনে হলেও, পরদিন সকালে হাঁটতে গিয়ে হঠাৎ জ্ঞান হারাই।“
চিকিৎসকরা অমিতের ইসিজি, এলএফটি, ইকো, কোলেস্টেরল পরীক্ষা করেছেন। এমনকী Angiography-ও হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সবই ধোঁয়াশা। আচমকা রক্তচাপ এত বেড়ে যাওয়ার সঠিক কারণ বের করা সম্ভব হয়নি।
নিজের LinkedIn পোস্টে আধুনিক কর্মসংস্কৃতির ভয়ঙ্কর দিকগুলো তুলে ধরেছেন অমিত। দীর্ঘক্ষণ কাজ, অতিরিক্ত চাপ এবং সবসময় কাজের মধ্যে থাকার মানসিকতাই নিঃশব্দে শরীরের বারোটা বাজাচ্ছে। অমিতের কথায়, “আমরা সবসময় টেরও পাই না, যতক্ষণ না তা গুরুতর আকার ধারণ করছে।“
আরও পড়ুন– কেউটে সাপের মুখে পড়লে কী করবেন? মাথা ঠান্ডা রেখে এই কাজ করতে পারলে তবেই প্রাণে বাঁচবেন
চিকিৎসকরা বলছেন, শরীর সবসময় স্পষ্ট সংকেত দেয় না। উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক চাপ ধীরে ধীরে ক্ষতি করতে পারে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অপরিহার্য। সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে, কাজ গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু স্বাস্থ্যের সঙ্গে আপোষ করে নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানেরও কিছু রহস্য আছে – এত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেও তার রক্তচাপ বৃদ্ধির সঠিক কারণ জানা যায়নি। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অমিতের পোস্ট দেখে অনেকেই উদ্বিগ্ন। কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্যের উপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা। প্রশান্ত কাম্বলে নামের এক ইউজার লিখেছেন, “আপনি অসুস্থ থাকা অবস্থায় এই পোস্ট লিখছেন, এর মানে হল আপনি এখনও নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সিরিয়াস নন। হে বন্ধু, দয়া করে ফোন থেকে কিছুক্ষণের জন্য দূরে থাকুন, পুরোপুরি বিশ্রাম নিন!”