মার্চের শেষ দিকে উদযাপিত হিলারিয়ার মতো রোমান উৎসবে মানুষ ছদ্ম নিয়ে হাজির হতেন এবং অন্যান্যদের ঠাট্টা করতেন। এমনটাও প্রচলিত রয়েছে। আবার আরও একটি মজাদার গল্প (যদিও কাল্পনিক) রয়েছে। কুগেল নামে একজন ঠাট্টাকারী, যিনি রোমান সম্রাট কনস্টানটাইনকে একদিনের জন্য রাজা হতে দিয়েছিলেন এবং এটিকে রসিকতার দিন হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। এটি ১৯৮০-এর দশকে ইতিহাসবিদ জোসেফ বসকিনের একটি প্রচলিত গল্প।
advertisement
এপ্রিল ফুলস ডে নিয়ে মজাদার কিছু বিষয়:
সবথেকে প্রাচীন প্র্যাঙ্ক:
প্রথম যে প্র্যাঙ্কের কথা জানা যায়, সেটি ঘটেছিল লন্ডনে ১৬৯৮ সালে। সিংহদের স্নান করানোর দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে পারবেন বলে প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে টাওয়ার অফ লন্ডনে পাঠানো হয়েছিল। আদতে এভাবে মানুষকে বোকা বানানো হয়েছিল। আর শতকের পর শতক ধরে ফুরফুরে মজাদার মন হালকা করা এই ঐতিহ্য চলে আসছে।
ক্যালেন্ডার নিয়ে বিভ্রান্তি:
১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে পরিবর্তনের মাধ্যমে এই দিনটি শুরু হতে পারে।
ঘটনার রোমান শিকড়:
অন্যরা এটিকে হিলারিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করেন। যা বহু সময় আগে থেকেই রোমানদের হাসি এবং ছদ্মবেশ ধারণের মজাদার উৎসব ছিল।
আরও পড়ুন– অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক চাষ করছেন এই গাছের, মাত্র ১৫টি বিক্রি করেই তাঁর আয় ১৬ লক্ষ টাকা!
বিশ্বব্যাপী উদযাপন:
ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। যেমন – স্কটল্যান্ডে এই দিনটিকে হান্ট-দ্য-গক ডে বলে অভিহিত করা হয়।
সংবাদমাধ্যমের রটনা:
১৯৫৭ সালে বিবিসি ব্রডকাস্টের তরফে একটি মজাদার রটনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছিল যে, স্প্যাগেটি গাছে জন্মায়।
ডিজিটাল বিগ বেন:
বিগ বেন-কে ডিজিটাল ঘড়িতে রূপান্তরিত করার বিষয়ে ১৯৮০ সালে বিবিসি মজা করেছিল।
নেটফ্লিক্স প্র্যাঙ্ক:
২০১৫ সালে নেটফ্লিক্স একটি মনগড়া পিএসএ প্রকাশ করে। দায়িত্ব সহকারে বিঞ্জ করুন বলে দর্শকদের প্রতি আর্জি জানানো হয়েছিল।
আগ্নেয়গিরি নিয়ে রটনা:
১৯৭৪ সালে সিটকায় আলাস্কার বাসিন্দাদের এটা বিশ্বাস করানো হয়েছিল যে, তাদের ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে।
আরও পড়ুন-
উড়ন্ত পেঙ্গুইন:
২০০৮ সালের একটি প্র্যাঙ্ক ভিডিওতে বিবিসি দেখিয়েছিল যে, পেঙ্গুইনরা উড়ছে।
রাজা কুগেলকে নিয়ে মিথ:
ইতিহাসবিদ জোসেফ বসকিনের ভণ্ড বিদূষক-রাজা সম্পর্কিত এক কৌতুক ব্যাপক ভাবে প্রচলিত ছিল।
এপ্রিল ফুলস ডে-তে মজাদার প্র্যাঙ্ক
ইনভার্টেড স্ক্রিন:
কি-বোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করে কম্পিউটারের স্ক্রিন ফ্লিপ করে দেওয়া যেতে পারে (Windows-এর জন্য Ctrl + Alt + Down Arrow)।
সাবানে ফেনা হবে না:
একটি ক্লিয়ার নেলপালিশের সাহায্যে সাবানের বারের উপর প্রলেপ লাগিয়ে দিতে হবে।
রঙিন জল:
কল থেকে যাতে রঙিন জল বেরোয়, তার জন্য কলের মুখের নীচে ফুড কালার রেখে দিতে হবে।
মাউস বিভ্রাট:
কম্পিউটারের মাউসের সেন্সরের নীচে টেপ লাগিয়ে দিতে হবে।
অটো-কারেক্টের মজা:
কারওর ফোন অটোকারেক্টে সাধারণ কিছু শব্দ বদলে যেতে দেওয়া যেতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, ইয়েস হয়ে যাবে নো)।
ফ্রোজেন সিরিয়াল
কারওর ব্রেকফাস্টের বাটিতে দুধ আর সিরিয়াল নিয়ে তা বরফ বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
সব জায়গায় গুগলি আইজ
ফ্রিজ এবং রান্নাঘরের সমস্ত সামগ্রীকে গুগলি আইজ আটকে দিতে হবে।
ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপ:
মজাদার ভয়েস ব্যবহার করে বন্ধুদের প্র্যাঙ্ক কল করার অ্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
কি-বোর্ড সোয়্যাপ:
বিভ্রান্তির ঝুঁকি এড়াতে কি-বোর্ডের সমস্ত কি রি-অ্যারেঞ্জ করা যেতে পারে।
জ্যুস বদলে দেওয়া:
অরেঞ্জ জ্যুসের জায়গায় ক্যারট জ্যুস রেখে দেওয়া যেতে পারে। তবে গাজরের জ্যুসটা পানযোগ্য কি না, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
সব শেষে এটাই বলা যায় যে, স্কুল, কলেজ এবং অফিসের বন্ধু অথবা সহকর্মী কিংবা সহপাঠীদের জন্য এই ধরনের প্র্যাঙ্ক একেবারেই নিরাপদ। আর বেশ মজাদার। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, মজা করতে গিয়ে কখনওই নিজের সীমা লঙ্ঘন করা উচিত নয়।