উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদে রয়েছে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থল প্রয়াগ। সেই অনুসারেই এলাহাবাদের নামকরণ করা হয়েছে প্রয়াগরাজ। বহু বছর ধরেই এই প্রয়াগে স্নান সারেন পুণ্যার্থীরা। এখানেই বসে কুম্ভমেলা।কিন্তু ইদানীং মানুষের মধ্যে সঙ্গমে স্নান করতে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আজকাল বেশির ভাগ মানুষই আসেন ‘মজা লুটতে’। আর তারই মাশুল দিতে হচ্ছে জীবন দিয়ে। মানুষেরই চূড়ান্ত গাফিলতিতে তলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে প্রয়াগ সঙ্গমে।
advertisement
পরিসংখ্যান খুবই আতঙ্কজনক বলে মনে করছে প্রশাসন। গত দেড় মাসে গঙ্গা-যমুনায় তলিয়ে মারা গিয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি। ফাফামাউ, সঙ্গম, নৈনি, করছনা-সহ সব ঘাটেই গত কয়েক দিনে কোনও না কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন উঠছে ঘাটের নিরাপত্তা নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতিতেই এই ধরনের ঘটনা বার বার ঘটছে। যথাযথ নজরদারির অভাবেই মর্মান্তিক ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে।
স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে ঘাটে। হতে পারে সেটা অত্যধিক গরমের কারণে। কিন্তু এখানে এসে তারা বেশ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে বলেই অভিযোগ। গত ২০ মে ফাফামাউ ঘাটে গুরুকুল মন্টেসরি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর দুই ছাত্র তলিয়ে যায়। পরে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। একদিন পরেই ২২ মে সাতনার দুই যুবকও তলিয়ে মারা যান ওই ঘাটেই। তার আগে শিবকুটির কোটেশ্বর মহাদেব ঘাটে এমএনএনআইটি-র দুই ছাত্র বিকাশ ও দীপেন্দ্রও স্নানে নেমে গভীর জলে তলিয়ে যায়। পরে উদ্ধার হয় মৃতদেহ।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়! ধন্যবাদ দিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গার ঘাটে গভীর জলের বিপদসীমা তৈরি করা রয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ অতিরিক্ত উৎসাহে সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করেন না। গত বুধবারও চার ছাত্র এই ভাবেই তলিয়ে যায় প্রয়াগে। মতিলাল নেহরু ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রও এভাবেই বিপদে পড়েন।
রিলের মোহ—
এই সব ঘটনার পিছনে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল তৈরি করার প্রবণতাও, মানছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে প্রশাসনের কর্তারাও। আশ্চর্যজনক কীর্তি করতে গিয়ে অনেকেই গভীর জলে চলে যাচ্ছেন। এটা একটা বড় কারণ বলে মনে করছেন সকলেই।