প্রতিকূলতার মধ্যেও জীবনের আলো
মহাসাগরের এত গভীরে বেঁচে থাকা অত্যন্ত কঠিন। কারণ এখানকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি থাকে। জলের চাপ থাকে প্রবল। খাওয়ার মতো নিউট্রিয়েন্টের পরিমাণও কম। তবু তা সত্ত্বেও বিজ্ঞানীরা এখানে ৭৫০০ অনন্য প্রজাতির মাইক্রোব খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ আবার সম্পূর্ণ ভাবে নতুন।
advertisement
(Image: Xiao et al., Cell, 2025)
চিনা বিজ্ঞানীরা এই গভীরতায় ৩৩ বার ডুব দিয়েছেন। এর জন্য মনুষ্য-চালিত সাবমার্সিবল ব্যবহার করা হয়েছিল। তাঁরা সেখান থেকে পলি এবং সামুদ্রিক জলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এরপর সেই সমস্ত নমুনা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। আর যা ফল প্রকাশ্যে এসেছে, তা রীতিমতো চমকপ্রদ।
এই সমস্ত এলিয়েন মাইক্রোব কীভাবে বেঁচে থাকে
বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে, এই সমস্ত মাইক্রোঅর্গ্যানিজমের দুটি প্রধান বেঁচে থাকার কৌশল রয়েছে। সেগুলি নিম্নলিখিত:
সাধারণ কিন্তু কার্যকর জীবনযাত্রা:
এই ধরনের মাইক্রোবগুলির রয়েছে ছোট জিনোম। যার ফলে সীমিত রসদেও বেঁচে থাকতে পারে তারা। তাদের মধ্যে রয়েছে এমন অনুঘটক, যা অতিরিক্ত চাপ এবং মহাসাগরের ঠান্ডাতেও তাদের বাঁচিয়ে রাখে।
নমনীয় এবং বহুমুখী মাইক্রোব:
কয়েকটি মাইক্রোবের রয়েছে বড় জিনোম। তারা একাধিক রকম পরিবেশেও বাঁচতে পারে। আর তারা ব্যবহার করে নানা ধরনের নিউট্রিয়েন্ট।
ভিন্ন ভিন্ন মাইক্রোব সব জায়গায় রয়েছে:
আরও একটি চমকপ্রদ বিষয় সামনে এসেছে। মহাসাগরের গভীর জায়গায় একাধিক ধরনের মাইক্রোব বসবাস করে। ছোট জায়গায় তারা থাকতে পারে এবং সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। গভীরতা যত বেশি, মাইক্রোবগুলি তত বেশি করে একে অপরকে সাহায্য করে। একে অপরের সঙ্গে তারা নিউট্রিয়েন্ট ভাগ করে নেয়। এরপর বায়োফিল্ম তৈরি করে নিজেদের রক্ষা করার জন্য।
ভবিষ্যতের জন্য বড়সড় উদ্ভাবন:
MEER (মারিয়ানা ট্রেঞ্চ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকোলজি রিসার্চ) প্রজেক্টের অধীনে এই গবেষণার তথ্য অনলাইনে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই গবেষণা প্রকাশ পেয়েছে Cell Journal-এ। বিজ্ঞানীদের মতে, এই গবেষণা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, চরম পরিস্থিতিতেও প্রাণ কীভাবে বিকশিত হয়