আসলে এক প্রবীণা ব্রিটিশ মহিলা এক বিদেশি পুরুষের প্রেমে মজেছিলেন। অথচ সেই বিদেশি পুরুষ তাঁর থেকে ২১ বছরের ছোট। এমনকী, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই জুটিকে অনেক সময়েই ট্রোলের মুখে পড়তে হয়েছিল। আসলে ভালবাসার কোনও বয়স হয় না। কিন্তু এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল ওই জুটির বয়সের বিস্তর ফারাক।
advertisement
সম্প্রতি এহেন এক অন্যরকম প্রেমকাহিনি প্রচারের আলোয় চলে এসেছে। ব্রিটেনের ৬৫ বছর বয়সী মহিলা জিনা এবং ৪৪ বছর বয়সী গ্যাম্বিয়ান ওয়েটার এব্রিমার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। টিভি শো 90 Day Fiance UK-তে নিজেদের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছিলেন তাঁরা। বছর দু’য়েক আগে জিনা ছুটি কাটাতে গ্যাম্বিয়ার বঞ্জুল শহরে গিয়েছিলেন। সেখানেই একটি রিসর্টে এব্রিমার সঙ্গে আলাপ হয় ওই বৃদ্ধার। এব্রিমার ফিটনেস এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের কারণে তাঁর প্রেমে পড়ে যান জিনা। তাঁর বক্তব্য, নিজের বয়সের কোনও পুরুষকেও আর তাঁর পছন্দ নয়। কারণ তাঁর বয়সী বেশিরভাগ পুরুষেরই মাথায় টাক। সঙ্গে থাকে বড়সড় একটা ভুঁড়িও। এদিকে এব্রিমা হলেন একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী। আর জিনা এমনিতে মদ্যপান করতেন এবং খোলামেলা পোশাক পরতেন। সেটা অবশ্য এব্রিমার না-পসন্দ ছিল। প্রেমিকের এহেন মতামত অবশ্য ধীরে ধীরে মেনে নেন ওই বৃদ্ধা।
প্রতারণা হচ্ছে বলে সন্দেহ মহিলার: এব্রিমাকে প্রচুর উপহারে ভরিয়ে দিয়েছিলেন জিনা। এমনকী প্রেমিককে আইফোন পর্যন্ত উপহার দিয়েছিলেন। আর আর্থিক সাহায্যও করেছিলেন। তা সত্ত্বেও নেটিজেনদের থেকে জিনাকে শুনতে হয়েছিল যে, তিনি শারীরিক চাহিদা মেটাতেই পর্যটক হিসেবে সেখানে গিয়েছিলেন। যদিও তিনি স্পষ্ট ভাবে বলে দিয়েছিলেন যে, যদি তাঁর যৌন চাহিদা মেটানোরই হত, তাহলে তো ইংল্যান্ডেই সেটা হতে পারত।
তবে এই অসমবয়সী প্রেমের সম্পর্কে একটা সময় জিনা বুঝতে পারেন যে, এব্রিমা তাঁকে সত্যি বলছেন না। আসলে এব্রিমা দাবি করেছিলেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। কিন্তু জিনার নাতনি টিলি এদিকে এব্রিমার ফেসবুক প্রোফাইল খুঁজে বার করে ফেলেছিলেন। যেখানে ওই ব্যক্তির প্রচুর মহিলা বন্ধু ছিলেন। এটা দেখে রীতিমতো পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় জিনার। তিনি বলেন, “ও তো বলেছিল, ও ফেসবুকে নেই। আমি খুবই রেগে গিয়েছিলাম। আসলে আমায় ঠকিয়েছে ও।”
আরও পড়ুন– শিশু পাচারের ঘটনা বানচাল করে দিল RPF ! বিশেষ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত রেল রক্ষী বাহিনীর
বোন না কি বৌ? জোরালো সন্দেহ জিনার: এখানেই শেষ নয়, জিনার সন্দেহ হয় যে, এব্রিমা যে মহিলাকে নিজের বোন বলে পরিচয় দিয়েছিলেন, সেই মহিলা আসলে তাঁর স্ত্রী। কারণ জিনা একবার শুনেছিলেন, ওই মহিলার পুত্র এব্রিমাকে ‘পাপা’ বলে ডাকছে। এব্রিমা নিজেও ওই শোয়ে বলেছিলেন যে, তিনি আসলেই ইংল্যান্ডে আসতে চান। গ্যাম্বিয়া জুড়ে শুধু দৈন্য আর দারিদ্র। কারণ সেখানকার মানুষের আয় খুবই কম। ফলে সেখানকার বেশিরভাগ বাসিন্দাকেই ব্রিটিশ পর্যটকদের উপর নির্ভর করতে হয়। কারণ তাঁরা সাধারণত ভাল টিপস দিয়ে থাকেন।
এদিকে কৈফিয়ত চাইতে আবারও গ্যাম্বিয়া ফিরে গিয়েছিলেন জিনা। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিয়ে এব্রিমাকে প্রশ্নও করেছিলেন। উত্তরে প্রথমে এব্রিমা জানান যে, তাঁর অ্যাকাউন্ট আগে ছিল, যা ডিলিট করা হয়েছে। কিন্তু প্রমাণ হিসেবে তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলের স্ক্রিনশট দেখিয়ে দেন জিনা। তাতে হেসে এব্রিমা বলেন যে, “এটা একটা মজা।” তাতে আরও রেগে ওঠেন জিনা। চেঁচিয়ে তিনি বলে ওঠেন, “তুমি যদি আমায় ঠকাও, তাহলে আমি কেন তোমার আর তোমার পরিবারের পিছনে সময় এবং পয়সা খরচ করব?” সমস্ত বাকবিতণ্ডার পরে জিনার অভিযোগের মুখে এব্রিমা এ-ও জানান যে, তাঁর বোন কখনওই তাঁর স্ত্রী নন। শেষে অবশ্য জিনা বলেন যে, এব্রিমাকে তিনি আরও একটা সুযোগ দিতে চান। আপাতত দু’জনেই এই সম্পর্কটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। ভবিষ্যতে একসঙ্গে থাকারও পরিকল্পনা রয়েছে অসমবয়সী এই যুগলের।