পুলিশের কাছ থেকে জানা গিয়েছে যে ২৩ মার্চ, ২০২৫ তারিখে আইজিআই বিমানবন্দর থানা এই চার ভুয়ো সাধু সম্পর্কে একটি পিসিআর কল পায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ অভিযোগকারী গগন জৈনের সঙ্গে দেখা করে। গগন জৈন পুলিশকে জানিয়েছেন যে তিনি মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তিনি এরোসিটিতে আয়োজিত তিন দিনের একটি সেমিনারে যোগ দিতে এসেছিলেন এবং কাছাকাছি একটি পাঁচতারা হোটেলে উঠেছিলেন। ২৩ মার্চ, ২০২৫ তারিখে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিনি হোটেল থেকে চেক আউট করেন এবং আন্দাজ হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন।
advertisement
যখন তিনি হোটেলের ৫ নম্বর গেটে পৌঁছন, তখন চারজন সাধু তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। তাঁদের শরীরে ছাই লেগে ছিল এবং পায়ে ঘণ্টা বাঁধা ছিল। তাঁরা নিজেদের হরিদ্বার আখড়ার মহাপুরোহিত এবং বেদজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। গগন জৈন বলেন যে, এই সাধুরা তাঁর কপালে তিলক লাগাতে চান। প্রথমে তিনি রাজি হননি। এই কথা শুনে চারজনই বলেন যে, যদি তিনি মা গঙ্গায় বিশ্বাস করেন, তাহলে তিলক লাগাতে অস্বীকার করা উচিত নয়। এই কথা শোনার পর, গগন চন্দন লাগাতে রাজি হন।
এই সময়ে সাধুদের চোখ যায় তাঁর আঙুলের বহুমূল্যবান সোনার আংটির দিকে। তাঁরা বলেন, এই আংটিতে দোষ আছে যা জৈনের সৌভাগ্যের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এ কথা শুনে ভয় পেয়ে গগন আংটি তাঁদের দেন, সাধুরা বলেন তাঁরা আংটি দোষমুক্ত করে দেবেন। আংটিটি পাওয়ার পর তাঁরা সবাই তাঁকে সেখান থেকে চলে যেতে এবং পিছনে ফিরে না তাকাতে বলেন, অন্যথায় তাঁর ক্ষতি হবে এও জানান। তাঁদের কথায় ভয় পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন। পরে গগন বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। দেরি না করে ফোন করে পুলিশকে ঘটনাটি জানান। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করে এবং চারজনের খোঁজ শুরু করে।
আরও পড়ুন– মাসে ২৫ দিন ট্রেনে ভ্রমণ! জিজ্ঞাসাবাদে যুবকের কথায় হেসে ফেলল GRP, তারপর যা হল…
ডিসিপি উষা রঙ্গনানি জানিয়েছেন, এলাকায় থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে চার অভিযুক্তকে সনাক্ত করা হয়। মহিপালপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতারও করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে, চারজনই তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে রয়েছে ৩০ বছর বয়সী রিঙ্কু নাথ, ২২ বছর বয়সী সাহিল নাথ, ৩৫ বছর বয়সী রকি নাথ এবং ৩১ বছর বয়সী ভিকি নাথ। রিঙ্কু, সাহিল এবং রকি উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। অন্য দিকে, ভিকি হরিয়ানার সোনিপত এলাকার বাসিন্দা। চার অভিযুক্তকেই ভারতীয় বিচার কোডের 318(4)/3(5) ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় জানা গিয়েছে, এরা সবাই আত্মীয় এবং বেদে সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। দীর্ঘ দিন ধরেই সাধুর বেশ ধরে এরা প্রতারণা করে চলেছে।