‘মাউন্টেন ম্যান’ বলে পরিচিত এই মানুষটিকে নিয়েই বলিউডে তৈরি হয়েছে ‘মাঝি: দ্য মাউন্টেন ম্যান’। আর ঠিক দশরথের মতোই অসাধ্য সাধন করে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল মহারাষ্ট্রের এক কিশোর। মাকে যাতে দূরে জল আনতে যেতে না হয়, তার জন্য বাড়িতেই আস্ত একটা কূপ খনন করে ফেলেছে সে!
আরও পড়ুন- এই পাতা ছুঁলেই মৃত্যু-যন্ত্রণা, পাগল হয়ে আত্মহত্যাও করে লোকে, চিনে নিন গাছটিকে
advertisement
মহারাষ্ট্রের থানে জেলার পালঘরের কেলভে তুরাংপাড়ায় বাস বছর চোদ্দোর প্রণয় রমেশ সালকরের। তার মা দর্শনা এবং বাবা রমেশ দু’জনেই বাঘিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে দিন গুজরান করেন। কাজ থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেই দর্শনাকে ছুটতে হয় জল আনতে। তা-ও বহু দূর থেকে!
জলের জন্য রীতিমতো কষ্ট করতে হয় তাঁদের। আর মায়ের এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে নিজেদের বাড়িতেই একটি কূপ খনন করার সিদ্ধান্ত নেয় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র প্রণয়।
যেমন ভাবা-তেমনি কাজ! দৃঢ় প্রতিজ্ঞ কিশোর চাষবাসে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কূপটি খুঁড়তে থাকে। প্রায় ১৮ ফুট খোঁড়ার পরে পানীয় জলের দেখা মেলে। সেই মুহূর্তে আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিল পরিবারের সকলের।
প্রণয় জানিয়েছে, “প্রায় ৪ দিনের নিরলস প্রচেষ্টায় এই অসাধ্য সাধন হয়েছে। আসলে মা-কে অনেক দূরে পানীয় জল আনতে যেতে হয়। মাথায় করে ভারী পাত্র নিয়ে যাওয়ার ফলে হাত-পা এবং শরীরে ব্যথাও হয়। এই কষ্ট আর দেখতে পারছিলাম না।”
ছেলের এই কাণ্ড দেখে দর্শনা বলেন, “আমি খুবই খুশি। এখন আর কষ্ট করতে হবে না। এই কূপের জল ব্যবহার করেই বাসনকোসন এবং জামাকাপড় ধোয়াধুয়ি করছি।” আবার ছেলের এই কাজে যারপরনাই গর্বিত বাবা রমেশও। তাঁর কথায়, “ঘরে কল না থাকায় দর্শনাকে দূরের কোনও কূপ বা পুকুরে যেতে হয় জল আনতে। এটা খুবই কষ্টসাধ্য। এখন আর অসুবিধা থাকল না।”
আরও পড়ুন- ভারতের প্রতিবেশী এই দেশে রয়েছেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ; কিন্তু নেই কোনও মসজিদ
প্রণয়ের এই কাজের কথা ছড়িয়ে পড়েছে। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ মহারাষ্ট্র পুলিশও। প্রণয়দের কলোনিতে নিজে গিয়ে ওই কূপটি পরিদর্শন করে এসেছেন এসপি বালাসাহেব পাটিল। তিনি জানিয়েছেন, যে বয়সে ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত, সেই বয়সে প্রণয়ের এই কৃতিত্ব সত্যিই প্রশংসনীয়!