বক্সায় বাঘের সন্ধান করতে গিয়ে মাথা ব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কোর এরিয়ার কাছের বন বস্তিও। রাজ্য বন দফতর সূত্রে খবর, প্রায় ১৫টি বন বস্তি আছে৷ যার মধ্যে দুটি বন বস্তির বাসিন্দাদের সরানো হচ্ছে। কারণ সেখানকার মানুষজন ও গৃহপালিত পশু। তাই বনবস্তির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে জোরকদমে সচেতনতা প্রচার শুরু করা হয়েছে। রাজ্যের বন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, "গাঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়া বস্তির বাসিন্দাদের সরানো একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে৷ আগামী দুই মাসের মধ্যে বাসিন্দাদের সরানো হবে। এর মধ্যে গাঙ্গুটিয়া গ্রামে ২০১টি পরিবার আছে।"
advertisement
বাকি গ্রামগুলির সাথে কথা চালাচ্ছে রাজ্য বন দফতরের আধিকারিক। অন্যদিকে, দ্রুত গতিতে ক্যামেরা ট্র্যাপের সহায়তায় গোটা বক্সার জঙ্গলকে মুড়ে ফেলার কাজও শুরু হয়েছে। ক্যামেরা ট্র্যাপের প্রত্যেকটির মধ্যে রয়েছে ৩২ জিবির মেমরি কার্ড, ইনফ্রারেড ও ফ্ল্যাশ মোডে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ছবি তুলতে সক্ষম। ২২০টি ট্র্যাপ ক্যামেরার সিংহভাগই 'অল ওয়েদার হোয়াইট ফ্ল্যাশ ডে-নাইট' প্রযুক্তিনির্ভর।মঙ্গলবার বক্সা নিয়ে বন দফতরের আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেছেন বন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
আরও পড়ুন: বক্সার পর জয়ন্তী, এবার কলকাতার পর্যটক দেখতে পেলেন 'সেই' পায়ের ছাপ!
সিদ্ধান্ত হয়েছে, জঙ্গলে বাঘ দেখার বা হিংস্র জীবজন্তু দেখার অভিজ্ঞতা এবং সেই সংক্রান্ত আধুনিক প্রশিক্ষণ রয়েছে, এমন বনকর্মীদেরই প্রথম সারিতে রেখে নিরাপত্তা বলয় ঢেলে সাজানো হবে। এখন থেকে জঙ্গলে টহলদারিতে আর চার জনের দল থাকবে। প্রত্যেকের হাতে থাকবে আগ্নেয়াস্ত্র। বক্সা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্যতম আধিকারিক বুদ্ধরাজ শেওয়ার কথায়, ''এতদিন আমাদের কাছে বক্সার জঙ্গলে বেড়াল পরিবারভুক্ত কমন লেপার্ড, ক্লাউডেড লেপার্ড, জাঙ্গল ক্যাট, মার্বল ক্যাট, গোল্ডেন ক্যাটের অস্তিত্বের প্রামাণ্য নথি ছিল। বর্তমানে বাঘের অস্তিত্ব মেলার পর একদিক দিয়ে আমরা যেমন দেশের আর পাঁচটি এলিট ব্যাঘ্র প্রকল্পের তালিকায় চলে এলাম, তেমনই আমাদের দায়িত্বও কয়েকশো গুণ বেড়ে গেছে।"
এই অবস্থায় বন দফতরের কর্মীদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, গাফিলতির কোনও জায়গা নেই। অরণ্য ভবনের তরফে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, টহলদারি চালাতে গিয়ে যে কোনও বন্যপ্রাণীর পায়ের ছাপ মিললেই খবর ততড়িঘড়ি পৌঁছে দিতে হবে বক্সার ফিল্ড ডিরেক্টরের কাছে। সংগ্রহ করতে হবে পাগমার্কের নমুনা। এর জন্য প্রতিটি দলের সঙ্গে রাখা থাকছে প্লাস্টার অফ প্যারিস ও জল। প্রতিদিন ভোরে এবং বিকেল থেকে সন্ধের আগে পর্যন্ত যাতে বনকর্মী ছাড়া কেউ জঙ্গলে ঢুকতে না পারেন, সেই দিকে কড়া নজর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন দফতরের নিজস্ব গোয়েন্দা বিভাগকে সক্রিয় করার নির্দেশিকা জারি করেছেন বন মন্ত্রী। যাতে বাঘটি চোরাশিকারিদের নজরে না পড়ে।