পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে বিহারে বিয়ে হয় উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার বাসিন্দা অঞ্জু দাসের। কিন্তু, তাঁর কোনও সন্তান হয়নি। তাই মেয়ের কোলে দুধের শিশু তুলে দিতেই ছক কষেন অঞ্জুর মা সীতা দেবী। সেইমতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দীর্ঘদিন ধরে রেইকিও করেন মা ও মেয়ে। তারপর গত বুধবার হয় অপারেশন৷
advertisement
আরও পড়ুন: সোমবার থেকেই তৃণমূলের মহাকর্মসূচি! নবজাগরণ যাত্রা শুরু করছেন অভিষেক
সকাল থেকেই মেডিক্যাল কলেজেই ঘাঁটি গেঁড়েছিলেন সীতাদেবীরা। ওই দিনই মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হন খড়িবাড়ির বাসিন্দা রঞ্জিতা সিংহ। তাঁরই দু'দিনের শিশু উধাও হয় বৃহস্পতিবার ভরদুপুরে। কিন্তু কীভাবে?
রঞ্জিতার সঙ্গে গল্প করে সখ্যতা তৈরি করেছিলেন সীতা দেবী। সেই সুযোগে শিশুকে খাওয়ানোর কথা বলে সীতাদেবী বাচ্চাটিকে কোলে নেন৷ তার পরেই চম্পট। মেডিক্যাল কলেজ থেকে অটোয় চেপে সোজা পৌঁছে যান তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে। তারপর সেখানে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাসে চেপে একেবারে চোপড়ার বাড়িতে।
মেডিক্যাল কলেজের একাধিক সিসিটিভি বর্তমানে বিকল অবস্থায় পড়ে থাকায় শুরুতে কিছুটা হলেও ধাক্কা খায় তদন্ত প্রক্রিয়া। শিশুচুরি নিয়ে সরব হয় বিজেপি, সিপিএম সহ বিরোধীদের একাংশও। হাসপাতালের সুপারের অফিস কার্যত অচল হয়ে যায় বিরোধী নেতাদের আন্দোলনের জেরে। চাপ বাড়তে থাকে পুলিশের।
এরপরে, শিশুচুরি কাণ্ডের কিনারা করতে পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদির নির্দেশে তৈরি হয় স্পেশাল টিম। ডিটেক্টিভ ডিপার্টমেন্ট, স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ, মাটিগাড়া থানার সাদা পোশাকের পুলিশ এবং মেডিক্যাল ফাঁড়ির পুলিশ নিয়ে তৈরি হয় তদন্তকারী দল। তারপর শনিবার একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশের হাতে তুলে দেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই ফুটেজ ধরেই আসে সাফল্য। খোঁজ মেলে অটো চালকের। তাঁকে জেরা করেই রহস্যভেদ করে পুলিশ। শিলিগুড়ির এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ঘটনায় একটি অপহরণের মামলা রুজু করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রবিবারই মেডিক্যাল কলেজে যান রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘আরও আটোসাঁটো করা হচ্ছে প্রসূতি বিভাগের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ২০টি সিসিটিভি দ্রুত বসানো হবে। পুলিশও জানিয়েছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।’’
পার্থপ্রতিম সরকার