স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে জানা যায়, আজও এই পুজোকে ঘিরে মেতে ওঠেন গ্রামের আট থেকে আশি সকলেই। প্রায় তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্গার আসনে মা মনসার পুজো হয়ে আসছে ফুলঘরা গ্রামে। পুরনাে নিয়ম রীতি রেওয়াজ কিছুই বদলায়নি আজও। পুজোর কয়েকটা দিন চণ্ডী ও মনসামঙ্গল গান হয়। এখানে মা মনসার একপাশে থাকেন দেবী লক্ষ্মী, অপর পাশে থাকেন দেবী সরস্বতী। জানা গেছে, পুজোর চার দিন নিয়ম মেনে গ্রামের সকলে নিরামিষ খাবার খান। জানা গেছে, বংশ পরম্পরায় পুরোহিত ও মৃৎশিল্পীর কাজ করে আসছেন নির্দিষ্ট পরিবার। পুজোর বায়না দিতেও হয় না বা ডাকতে হয় না। সময়মতো চলে আসেন সকলেই।
advertisement
আরও পড়ুন : দুর্গাদালানের প্রাচীন খিলান ছুঁয়ে যায় ইছামতীর বাতাস, টাকির পুবের বাড়ির পুজো ঘিরে নস্টালজিয়া
এখনও পুজোতে আগের কাঠামোর বাঁশ দিতে হয়। এমনকি মায়ের কাছে নিষ্ঠা সহকারে কোন কিছু চাইলে তা পূর্ণ হয় এমনটাই বিশ্বাস গ্রামবাসীদের। পুজোর কয়েকদিন আগে গ্রামে ফিরে আসে সব বাড়ির ছেলেমেয়েরা। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। মানত করেন তাঁরা। মানত পূরণ হলে মাকে বিভিন্ন অলংকার দেন। বহুকাল আগে ফুলঘরা গ্রামের বহু ব্যক্তি সর্পাঘাতে মারা যেতেন। বহু কিছু করেও সর্পাঘাতে মৃত্যু প্রতিরােধ করতে পারছিলেন না গ্রামবাসীরা। সেই সময় গ্রামের এক ব্যক্তি স্বপ্নাদেশ পান। গ্রামে মনসা পুজো করলেই কমবে মৃত্যু। গ্রামবাসীরা এরপর মা মনসার পুজো শুরু করেন। প্রথমে শ্রাবণ মাসে এই পুজো শুরু হয়। গােটা এলাকায় কোনও দুর্গাপুজো না হওয়ায় সেই মনসা পুজো শারদোৎসবে করা হয়। এখন সেই একই নিয়ম রীতিতেই এই পুজো করে আসছেন ফুলঘরা বারােয়ারি মনসাপুজো কমিটি।