মঙ্গলবার গভীর রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে প্লাবন দেখা দেয় সিকিমের লেক লুনকে৷ যার জেরে চুঙথাং বাঁধেও আসে ফাটল৷ সব মিলিয়ে বানভাসি হয় সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা৷ ভাঙে কংক্রিটের ব্রিজ৷ ধসে যায় জাতীয় সড়ক৷ এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা ব্যারেজের উপরেও এসেছে পড়েছে জলের বিপুল চাপ৷ যার জেরে কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের একাধিক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷
advertisement
বৃহস্পতিবার সকালেই সিকিমে হড়পা বানে একাধিক সেনাকর্মীর নিখোঁজ হওয়ার খবর সামনে আসে৷ এমনকি, গাজোলডোবায় উদ্ধার হওয়া দেহগুলি সেনাকর্মীদের কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়৷ সেনা সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ ২৩ জন সেনার মধ্যে একজনেরই খোঁজ মিলেছে৷ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনার ত্রিশক্তি ট্রুপের জওয়ানেরা৷ তবে নাগাড়ে বৃষ্টি, তিস্তার বিপুল খরস্রোত, বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা ও সেতু ধসে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা এ সমস্তই উদ্ধারকাজে বাধাসৃষ্টি করছে৷
আরও পড়ুন: বীভৎস অবস্থা উত্তরবঙ্গের! রাজ্যের একাধিক জেলায় জারি রেড অ্যালার্ট, কবে থামবে দুর্যোগ!
বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নিখোঁজ ২২ সেনাকর্মীর পরিবারকেও সবকিছু জানানো হয়েছে বলে সেনা সূত্রের খবর৷ সিকিম এবং উত্তরবঙ্গে কর্মরত বাকি সমস্ত সেনা জওয়ান সুরক্ষিত বলে জানা গিয়েছে৷
বুধবার বিকেলে একটি বিবৃতির মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির কথা জানায় নবান্ন৷ বিবৃতিতে জানানো হয়, সিকিমে বর্তমানে আটকে পড়েছেন কমপক্ষে ২০০০ পর্যটক৷ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তাঁদের অবস্থান ও পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য তাঁদের পরিবারকে জানানো হয়েছে৷ পর্যটন দফতরের তরফে খোলা হয়েছে 24×7 Control Room (1800-212-1655 ও +91-9051888171)৷
উত্তরবঙ্গে এখনও পর্যন্ত তিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছে না সিকিম সীমানা সংলগ্ন কালিম্পংয়ের লাভা ব্লকের ১৪ জন বাসিন্দার৷ তাঁদের মধ্যে ১৩ জন রংপো ফরেস্ট ভ্যালির বাসিন্দা৷ এক জন তারখোলার৷
ইতিমধ্যেই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর ৪টি দল উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে৷ কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার মিলিয়ে মোট ৩৯টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে, অন্যত্র সরানো হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষকে৷