অভিযুক্ত যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মালদহ শহরের প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত সিঙ্গাতলা এলাকায় এক চালু ওষুধের দোকানে চেম্বার খুলে বসেছিলেন ওই যুবক। রীতিমতো বোর্ড ঝুলিয়ে মাস দুই -তিনেক ধরে চলছিল 'চিকিৎসা', এমনটাই অভিযোগ। এরইমধ্যে কয়েকশো মানুষকে দেখেন ওই চিকিৎসক। মোটা টাকা ভিজিটও নিতেন। নিউরো চিকিৎসকের অভাব থাকায় দূরদূরান্ত থেকেও রোগীরা তার চেম্বারে আসতেন।
advertisement
কিন্তু, বেশ কিছুদিন ধরেই তার প্রেসক্রিপশন দেখে সন্দেহ হয় দোকান মালিকের। রেজিস্ট্রেশন নম্বর সার্চ করে দেখা যায় কলকাতার এক চিকিৎসকের। এর পর থেকেই গোপনে তদন্তে নামে সাইবার ক্রাইম পুলিশ।
আরও পড়ুন : উঠছে একাধিক প্রশ্ন, ওড়িশার ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার তদন্তে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি
রোগী দেখাকালীন তার চেম্বারে হানা দেয় সাদা পোশাকের পুলিশ। রোগী সেজে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় তাকে। ধরা পড়ে গিয়ে নানা অসঙ্গতিপূর্ণ কথাবার্তা বলতে থাকেন তিনি। তাঁর চেম্বার থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় বেশকিছু লেটারহেড, কিছু রোগীর নামে লেখা প্রেসক্রিপশন, ভুয়ো পরিচয়পত্র।
আরও পড়ুন : শীতের শুরুতে সর্দির সঙ্গে কাশিতেও জেরবার কলকাতাবাসী, উদ্বিগ্ন ডাক্তাররা
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, বছর ৩৪- এর ওই যুবকের নাম বুদ্ধদেব দে। বীরভূমের নলহাটির কামারপাড়ার বাসিন্দাা। এক সময় তিনি আসানসোলেও থাকতেন। আদতে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ বুদ্ধদেব একেবারে নিউরো ফিজিসিয়ান সেজে বসে পড়েন মালদহের প্রাইভেট চেম্বারে। কিন্তুুুু গত দু-তিন মাস ধরে বিভিন্ন রোগীদের দেখে কী ওষুধপত্র লেখেন এই চিকিৎসক ? সেইসব খেয়ে রোগীদেরই বা কী হাল ? এমন নানা প্রশ্ন দানা বেঁধেছে। তার লেখা প্রেসক্রিপশন খতিয়ে়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
যে ওষুধের দোকানে তিনি প্রাইভেট চেম্বার খুলেছিলেন সেখানে আরও একাধিক চিকিৎসক বসেন। দোকান মালিকের দাবি, এক মেডিকেল প্রেজেন্টেটিভ ওই চিকিৎসককে নিয়ে তাঁর দোকানে আসেন। এরপর চেম্বার খুলতে ইচ্ছে প্রকাশ করলে ব্যবস্থা করেে দেন তিনি। ওই দোকান মালিকের কাছে খোঁজ নিয়ে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কেউ জেরা করছে পুলিশ। তার ভূমিকাও খতিয়েে দেখা হচ্ছে। কিন্তু, কোনও উপযুক্ত কাগজপত্র বা নথি যাচাই না করে একজনকে 'চিকিৎসক' হিসেবে ধরে নিয়ে চেম্বার খুলতে দেওয়া হল কেন ? এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি।
এদিকে ভুয়ো ডাক্তার আটকের খবর পেয়ে এলাকায় ভিড় জমান প্রচুর মানুষ। প্রকাশ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীদের একাংশ। জানান, কেউ একমাস কেউবা তারও বেশি সময় ধরে ওই চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করিয়ে ওষুধ খাচ্ছিলেন। ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত ও ভুয়ো চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন রোগীরা।