১০০-র বেশি বনকর্মী গত ১৩ দিন ধরে খাওয়ানাওয়া ভুলে গণ্ডারগুলিকে জঙ্গলে ফেরাতে মাঠে নেমেছিলেন। অক্লান্ত পরিশ্রমের পর তাদের ফেরানো গিয়েছে অবশেষে। জলদাপাড়া অভ্যায়ারণ সূত্রে খবর, প্রথম তিনদিনে পাঁচটি গণ্ডারকে সহজেই জঙ্গলে ফেরানো গিয়েছিল। বাকি পাঁচটিকে ফেরাতে কাঠখড় পোড়াতে হয় বনকর্মীদের। তাদের অনেকে কোনও গর্তে পড়ে গিয়েছিল। কয়েকটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। তাদের ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করা হয়। চিকিৎসার পর তাদের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
advertisement
সম্প্রতি বিপর্যয় নেমে আসে উত্তরবঙ্গে। ভুটানের জলে ভেসে যায় ডুয়ার্স। জলে ভাসে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানও। জলদাপাড়ার জঙ্গলে সবথেকে বেশি গন্ডার থাকে তোর্সা নদীর তীরে। বিপর্যয়ের দিনে তোর্সার জলে ভেসে যায় বেশ কয়েকটি গন্ডার। কিছু গন্ডার তো ভেসে কোচবিহারে চলে যায়। এই গন্ডারদের ঘরে ফেরাতে জলদাপাড়া থেকে শুরু হয় অপারেশন রাইনো। গত ১৩ দিনে ১০টি গন্ডারকে উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা। এর মধ্যে ৫ গন্ডারকে জঙ্গলে ফেরানো হয়েছে। বাকি ৫ গন্ডারকে আর কিছুদিনের মধ্যেই জঙ্গলে ফেরানো হবে। পরভিন কাসোয়ান (ডিএফও, জলদাপাড়া) জানিয়েছেন, ‘৫ অক্টোবর বন্যা আসে তোর্সায়। তোর্সার কাছে ডেনসিটি। অনেক রাইনো ভেসে যায়। কোচবিহার থেকে ৫টা এনেছি। অপারেশন রাইনো সফল। আমাদের বন্যকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এটা সফল করেছেন।’ আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের সম্পাদক ত্রিদিবেশ তালুকদার জানিয়েছেন, ‘গন্ডার উদ্ধার হল পাতলাখাওয়া থেকে। বনকর্মীরা তৎপর হয়ে গন্ডার উদ্ধার করেছে। জলদাপাড়া ফিরিয়ে দিয়েছে।’
দুর্যোগের সময় জলদাপাড়া থেকে গণ্ডার ভেসে যাওয়ার ছবি উঠে এসেছিল। দু’টি গণ্ডারের লড়াইয়েরও সাক্ষী থেকেছেন স্থানীয়রা। তাদের ফেরাতে তৎপর হয়ে ওঠেন কর্তারা। নাম দেওয়া হয় রাইনো অপারেশন। অবশেষে ১৩ দিনের লড়াইয়ের পর তাদের ‘ঘরে’ ফিরিয়ে দিতে পেরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন কর্মীরা।