স্বাধীন কোচবিহার রাজের তৎকালীন সময়ের বিচারালয়ের বিচারপতি ছিলেন শিবপ্রসাদ মোস্তাফি। তাঁর নামেই এই গ্রামের নাম রাখা হয়। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সাবেক ছিট মহলের অন্তর্গত ছিল এই শিবপ্রসাদ মোস্তাফি।
২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ের সময় ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় এই গ্রামটি। গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে বানিয়াদহ নদী। আর এই নদীর কাছে এই গ্রামেই রয়েছে দীর্ঘ প্রায় ২৩৫ বছরের পুরনো এক টেরাকোটার শিব মন্দির।
advertisement
এই এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দা ও মন্দিরের রক্ষক অনুকূল চন্দ জানান, “এই শিব মন্দির প্রতিষ্ঠার নানান ইতিহাস রয়েছে। দিনহাটা থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরে রয়েছে এই পুরোনো শিব মন্দির। আনুমানিক ১৭৯০-১৭৯৫ খ্রিষ্টাব্দে শিবপ্রসাদ মোস্তাফি এই শিব মন্দির বা বুড়া বাবার মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।’’
মন্দিরটির মধ্যে টেরাকোটার শৈলীর ছাপ দেখতে পাওয়া যায়। তৎকালীন সময়ে টেরাকোটার কাজের জন্য রাঢ় বঙ্গ থেকে শিল্পীদের আনা হয়েছিল।
এই মন্দির দীর্ঘদিন মুস্তাফি পরিবারের থাকলেও পরবর্তীতে চ্যাটার্জী পরিবারের হাতে চলে যায়। এখন বংশ পরম্পরায় মন্দিরের তত্বাবধানের দায়িত্বে তাঁরাই রয়েছেন।”
মন্দিরে ঘুরতে আসা এক পর্যটক রূপা বর্মন জানান, “এই মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। ১৮৯৭ সালের ভুমিকম্পে মন্দিরটি প্রায় পাঁচ ফুট মাটির নিচে বসে যায়।’’
বর্তমানে মন্দিরের সামনের দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে খোদাই করা বিভিন্ন দেব দেবীর মূর্তি। মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের উপরেই রয়েছে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি।
মন্দিরের আর এক পর্যটক অনুভা দাস জানান, “অতি প্রাচীন কাল থেকেই মন্দিরের পাশে রয়েছে একটা পাঙুয়া গাছ। এছাড়াও মন্দিরের আর এক পাশে রয়েছে পাতকুয়ো। এই দুটি এখনও প্রাচীন সমস্ত স্মৃতি বহন করছে। যদিও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত এই মন্দির অবহেলায় ছিল। তাই দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন এই মন্দির চত্বরের।”
যদিও ২০১৫ সালে ছিট বিনিময়ের পর এই এলাকায় রাস্তা-ঘাট, ইলেকট্রিক হয়েছে অনেকটাই। ফলে এখানে শীতের মরসুমে ও বিভিন্ন পুজোর দি গুলোতে বহু মানুষের ভিড় জমে।
শীতের মরসুম পড়তেই পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে জেলায়। তাই জেলার এই অন্যতম প্রাচীন শিব মন্দির আকর্ষণ করছে বহু পর্যটকদের।
Sarthak Pandit