ভুটান পাহাড়ে একটানা বৃষ্টির জেরে ভুটানের পাগলা খোলার জলের চাপে ভেঙে পড়েছে ভারত- ভুটান সীমানার প্রায় ১০০ ফুট এলাকার প্রাচীর । জল ঢুকে পরে নাগরাকাটা ব্লকের জিতি চা বাগানের ৮ নম্বর লাইনে। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক বস্তি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রবিবার রাতে অবিরাম বৃষ্টির জেরে নাগারাকাটা ব্লকের জিতি চা বাগান লাগোয়া ভারত ভুটান সীমান্তের ১০০ ফুট সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ে, যেটি ভুটানের তরফ থেকে সীমানা নির্ধারণের জন্য দেওয়া হয়েছিল। এরপর হু হু করে জল ঢুকতে থাকে ভুটান থেকে ভারতের এই অঞ্চলে। রাতে এলাকায় পৌঁছায় নাগরাকাটার বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। উদ্ধার করা হয় ওই এলাকার শ্রমিক মহল্লার বাসিন্দাদের।
advertisement
টানা প্রবল বৃষ্টিতে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গায় বিপর্যয়ের ছবি। পুজোর আগেই ফের আতঙ্ক ছড়াল বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায়। শিলিগুড়িতে এক রাতের বৃষ্টিতে মহানন্দা নদী উপচে পড়েছে, ফুলবাড়ি মহানন্দা ব্যারেজে জল বেড়েছে ব্যাপক হারে। গজলডোবায় তিস্তার জল সেতু ছুঁই ছুঁই অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে জাতীয় সড়ক ১০ তিস্তার জলের তলায় চলে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, উত্তর সিকিমের রিংখোলা ব্রিজের কাছে ভয়াবহ ভূমিধস হওয়ায় মঙ্গন এবং জঙ্গু যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফিদাং থেকে সাংকালাং সংযোগকারী রাস্তাটির একাংশ ধসে নেমে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। গ্যালশিং জেলার সারদংলামা গ্রামে শনিবার সন্ধ্যায় ভূমিধসের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ বছরের রাজেন গুরুং, যিনি সর্দং লুন্জিক গ্রাম পঞ্চায়েত ইউনিটের পঞ্চায়েত সভাপতি ছিলেন। ঘটনাটি ঘটে রাত সাড়ে সাত’টা নাগাদ।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সিকিম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (SSDMA) ও জেলা প্রশাসন সর্বসাধারণকে সতর্ক থাকার নির্দেশ জারি করেছে। বাসিন্দাদের ভূমিধসপ্রবণ এলাকায় অযথা যাতায়াত এড়াতে, অস্বাভাবিক জলপ্রবাহ ও মাটি ফাটল লক্ষ্য করতে, ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনায় না থাকতে এবং শুধুমাত্র সরকারি তথ্য অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে স্থানীয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে পুজোর আগে এই অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও ভূমিধস পর্যটন মরশুমেও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রশাসন ইতিমধ্যেই উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে তৎপর হলেও আবহাওয়ার উন্নতি ছাড়া স্বস্তি মিলবে না বলেই মনে করছেন বাসিন্দারা।
