শুক্রবার ঈশ্বর চন্দ্র রায়ের সমর্থনে ধূপগুড়ি ডাক বাংলো ময়দানে এক মঞ্চে সভা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ছিলেন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। একদিকে মুম্বইয়ে একসঙ্গে ইন্ডিয়া জোটের হয়ে বৈঠক করছেন সনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি, সীতারাম ইয়েচুরি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা, তখন ধূপগুড়িতে বিভিন্ন ইস্যুতে বিজেপি-র পাশাপাশি তৃণমূলকেও আক্রমণ শানালেন অধীর, সেলিমরা৷
advertisement
ধূপগুড়ির উপনির্বাচনের ভোট প্রচারে তৃণমূল, বিজেপি ঝড় তুললেও সেই অর্থে ধূপগুড়িতে দেখা যাচ্ছিল না বাম কংগ্রেসের নেতানেত্রীদের। তবে আলোচনায় বারবার সাগরদিঘি প্রসঙ্গ উঠে আসায় এ দিনের সভা দুই পক্ষের কাছেই ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কে কী বলছেন সেই দিকেই তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল। প্রত্যাশিত ভাবেই দুই দলের দুই শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্যের বেশির ভাগ অংশ জুড়েই ছিল তৃণমূল আর বিজেপি। তবে এ দিন উল্ল্যেখযোগ্য ছিলো প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়কে মঞ্চে ডেকে শপথ নেওয়ানোর ঘটনা। এ দিন মহম্মদ সেলিম বলেন, যেমন সাগরদিঘি পথ দেখিয়েছে, তেমন ধূপগুড়িও দেখাবে।
সাগর দিঘি মডেল হলেও শেষ পর্যন্ত ভোটে জেতার পর তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস৷ বাইরনের ডিগবাজি নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়ে ছিল কংগ্রেস ও তার জোট সঙ্গী সিপিএমকে। এ দিন মঞ্চে ডেকে প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়কে মহম্মদ সেলিম বলেন, “কেউ কেউ বলছেন না সাগরদিঘি, সাগরদিঘি? ঈশ্বরচন্দ্রবাবু কেও বলতে হবে আপনারা তো ভোট দেবেন। ভোটের পর উনি কি করবেন।” সেলিমের কথা শেষে হতেই মাইকের কাছে এগিয়ে গিয়ে ঈশ্বরচন্দ্র রায় কার্যত শপথ নেওয়ার ভঙ্গিতে বলেন, “আমি বামফ্রন্ট মনোনীত, কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে শপথ করছি, আপনারা যেভাবে আমাকে আশীর্বাদ করেছেন ৫ সেপ্টেম্বর আশীর্বাদ করবেন। আপনাদের ছেড়ে আমি কোনও দিন কোনও ভাবেই অন্য কোনও রাস্তায় যাব না, যাব না।”
এ দিন ধুপগুড়িতে সভায় অধীর চৌধুরী বলেন, ১০০ দিনের টাকা লুঠ হয়েছে। বাংলায় সন্ত্রাস চলছে। তৃণমূল, বিজেপি সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। ইন্ডিয়া জোট প্রসঙ্গকে পাশ কাটাতে গিয়ে বলেন, ‘খবরের কাগজ দেখার দরকার নেই। কোথায় কী হচ্ছে দেখার দরকার নেই। পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়িতে বিজেপি, তৃণমূলকে উৎখাত করতে বাম ও কংগ্রেস জোট প্রার্থীকে ভোট দিন।’ এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইন্ডিয়া জোটের প্রসঙ্গ কার্যত পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন মহম্মদ সেলিমও।
অধীররঞ্জন চৌধুরী এদিন ভাষনে আরো বলেন, ‘যেদিন পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়েছিল। সেদিন থেকে শুরু হয়েছিল সন্ত্রাস। প্রার্থী হওয়ার হিম্মত দেখালে এক ধরনের সন্ত্রাস, প্রার্থী হতে গিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গেলে সেখানে সন্ত্রাস, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পর প্রত্যাহার করার জন্য একটা সন্ত্রাস, ভোটের প্রচারে সন্ত্রাস, ভোটের দিনে সন্ত্রাস, বোর্ড গঠনের আগে সন্ত্রাস, বোর্ড গঠনের সময় সন্ত্রাস, বোর্ড গঠনের পরের সন্ত্রাস, এমন কি বোর্ড ভেঙে দেওয়ার সন্ত্রাস। সব আপনারা নিজের চোখে দেখেছেন। তৃণমূলের হার্মাদ ও পুলিশের যৌথ আক্রমণের সন্ত্রাসে বাংলার মানুষ দিশেহারা। তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার অধিকার তাঁরা হারিয়েছেন। আসুন এই বিধানসভার উপনির্বাচনের সেই তৃণমূলে সন্ত্রাসকে পথে নামানোর একটা সুযোগ পেয়েছেন। আপনারা সেই সন্ত্রাসের বদলা নিন ভোটদানের মধ্য দিয়ে।’