বেহাল দশা ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের। কখনও ধস আবার কখনও অতিবৃষ্টিতে তিস্তা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে NH 10। গত বছর পাঁচ মাসে প্রায় ১৩ বার বন্ধ হয়েছে এই জাতীয় সড়ক। চলতি বছরেও একই ছবি এই জাতীয় সড়কের।বর্তমানে এই সড়ডটি কার্যত যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন, পর্যটক ও নিত্যযাত্রীদের কাছে। মূলত কালীঝোরা থেকে মেল্লি পর্যন্ত রাস্তার ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছে।এই ২৬ কিলোমিটার রাস্তার ভয়াবহ পরিস্থিতি।বৃষ্টি হলেই ওই এলাকার রবিঝোরা, লিকুবির, ২৯ মাইল, গেইলখোলায় ধস নামছে। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। রাস্তা সাময়িক মেরামত করে যান চলাচল চালু করার কয়েক দিনের মধ্যেই আবার বন্ধ রাখতে হচ্ছে।জাতীয় সড়কের দু’পাশে একের পর এক সরকারি প্রকল্পের কাজ চলার ফলেই সিকিম যাতায়াতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির এমন হাল বলে মনে করা হচ্ছে। জাতীয় সড়কের একেবারে গাঁ-ঘেঁষে তিস্তা নদীতে জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিগমের একের পর এক প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে, তৈরি হচ্ছে সিকিমগামী রেল প্রকল্প।
advertisement
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, *হিমালয়ের এই অংশ অত্যন্ত ইয়াং, ফলে হার্ড রক অনেকটাই কম।
*পাহাড়ের একটা নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র আছে। সেই বাস্তুতন্ত্রে বারবার আঘাত হানা হচ্ছে।
*তিস্তা নদীর বিভিন্ন অংশে যে ভাবে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে, তাতে নদী তার স্বাভাবিক পথে বইতে পারছে না। অতিবৃষ্টিতে তা দু’কুল ছাপিয়ে যেতে চাইছে।
*প্রযুক্তিবিদদের কথায়, তিস্তা প্রতিনিয়ত টো ইরোশন করছে। অর্থাৎ একেবারে নীচে থেকে মাটি, পাথর নিয়ে সরে যাচ্ছে।
*সেবক সেতুর বিকল্প সেতু তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেতু যে জায়গায় আছে, সেটি সবচেয়ে শক্তিশালী পাহাড়ের জায়গা। এর পর আর তেমন পাথর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
*রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় যে সমস্ত পাহাড়ি ঝোরা ছিল তা কার্যত নানা নির্মাণ কাজের জন্য বাধাপ্রাপ্ত। ফলে বাস্তুতন্ত্রর নিয়মে সুযোগ পেলেই সে বেরিয়ে আসতে চাইছে অস্বাভাবিক ভাবে। আর সেই সব স্থানেই বেশি করে ধস নামছে।
*সিকিমের নগরায়ণের জন্য ভারী ভারী গাড়ি যাতায়াত বেড়েছে। তাতে যে পরিমাণ চাপ পড়েছে ওই আলগা মাটিতে তা ক্ষতি করেছে।
গত অক্টোবর মাসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত প্রায় ৫২.১০ কিলোমিটার রাস্তা এবার থেকে দেখভাল করবে ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড। ধস এবং তিস্তা নদীর জলস্রোতের কারণে ৩০ থেকে ৩৫টি নতুন স্পর্শকাতর জায়গা চিহ্নিত হয়েছিল।