জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাতির হানা। বর্তমানে সন্ধ্যার পরেই জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় ধান ক্ষেতে হানা দিচ্ছে হাতির দল। দিনের বেলা ধান খেতে আসছে পাখি। হাতি ও পাখির হাত থেকে ফসলকে কীভাবে বাঁচানো যায় তা নিয়ে কার্যত চিন্তায় পড়েছিল কৃষকেরা।
হাতি ও পাখিদের থেকে ধান ক্ষেত বাঁচাতে অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করেছে জঙ্গল লাগোয়া এলাকার কৃষকেরা। এতে শুধু ধান ক্ষেতে হাতি ও পাখির হানা আটকানো যাচ্ছে তাই নয় বরং হাতি ও পাখিরাও আঘাত প্রাপ্ত হচ্ছে না। বর্তমানে জলপাইগুড়ির মাটিয়ালি ব্লকের গরুমারা জঙ্গল সংলগ্ন উত্তর ধুপঝোরা মাকরাপাড়া এলাকায় গেলেই চোখে পড়বে এই পদ্ধতি।
advertisement
তবে কেমন এই পদ্ধতি?
আরও পড়ুনঃ জঙ্গলে গরু খুঁজতে গিয়েই সর্বনাশ! ঝোপঝাড়ের আড়াল থেকে এগিয়ে এল সাক্ষাৎ ’যমদূত’, মুহূর্তে সব শেষ
ধান ক্ষেতের চারিদিকে অ্যালুমিনিয়ামের তার টাঙিয়ে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর অন্তর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে প্লাস্টিকের টুকরো। আর হাতি ফসল ক্ষেতে প্রবেশ করতে চাইলেই তারের সঙ্গে হাতির ঘষা লাগালেই হবে আওয়াজ। আর এই আওয়াজেই হাতি ভয় পেয়ে আর ধান ক্ষেতে ঢুকবে না বলে দাবি কৃষকদের। এটা আওয়াজ নয় যেন এলার্ম হিসেবে কাজ করছে কৃষকদের জন্যও। যখনই ঝন ঝন আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন ক্ষেতের পাহারাদার বা জমির মালিক সঙ্গে সঙ্গে তারা সতর্ক হয়ে সার্চ লাইট জ্বালিয়ে বা পটকা ফাটিয়ে হাতির দলকে তাড়িয়ে দিতে পারছেন। রাতেরবেলা এইভাবেই হাতির হাত থেকে ধান ক্ষেত রক্ষা করার পাশাপাশি দিনের বেলাও ঝুলে থাকা প্লাস্টিক হাওয়ায় নড়ার ফলে পাখিরাও ক্ষেতে আসতে ভয় পাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ প্রশাসনের দুর্দান্ত উদ্যোগ, স্বল্প সুদ ও সরল কিস্তিতে মহিলাদের ঋণ, কীভাবে? জানুন বিস্তারিত
এলাকার কৃষক সানিচারোয়া ওরাওঁ বলেন, ‘বর্তমানে ধানের মরশুমে হাতির পালের অত্যাচারে আমাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল। এরপর বহু চিন্তাভাবনা করে আমরা বিকল্প কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করতে শুরু করি। ধান পাকতে শুরু করেছে। তাই এই ব্যবস্থা করেছি। এখন হাতি ও পাখির হাত থেকে ধান ক্ষেতকে এই পদ্ধতির মাধ্যমে ভালভাবেই রক্ষা করা যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে আমরা হাতির হাত থেকে ধান রক্ষা করার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করি’।
এলাকার বাসিন্দা সাবুল হক বলেন, ‘বর্তমানে সন্ধ্যার পরেই খাদ্যের লোভে হাতির দল চলে আসছে লোকালয়ের ধান ক্ষেতে। নষ্ট করছে ধান ক্ষেত। এই পদ্ধতি অবলম্বনের ফলে হাতি ও পাখিদের হাত থেকে ধান ক্ষেত অনেকটাই রক্ষা পাচ্ছে। তবে রাতে লোকালয়ে হাতি আসলে যাতে হাতি-মানুষ সংঘাত না হয় সেই বিষয়ে আমরাও সব সময় জনগণকে সচেতন করি।’
