GNLF নেতা মহেন্দ্র ছেত্রী জানান, ‘২০১৯–এ লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি–র সঙ্গে জোট বেঁধেছিলাম, সেই জোট বিধানসভা নির্বাচনেও আমরা রাখতে চাই।’ এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি–র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘জিএনএলএফের সঙ্গে জোট বেধে আসন্ন নির্বাচনে আমরা লড়াই করব।’ ২০১৯ সালে বিধানসভা উপনির্বাচনে জিএনএলএফ প্রার্থী নীরজ জিম্বা জোট করে বিধানসভা ভোটে লড়েন। এ দিন নীরজ জিম্বাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। নীরজের বক্তব্য, 'পাহাড়ে স্থায়ী সমস্যার সমাধান একমাত্র বিজেপি করতে পারে। তাই তাদের সাথে আলোচনা করে আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে এসেছি।'
advertisement
বৃহস্পতিবারই পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুর স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি ১১টি গোর্খা সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বৈঠক শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি–র সঙ্গে জোট বাধার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় GNLF। পাহাড়ের বৈঠকে দিল্লিতে, জিএনএলএফের পাশাপাশি অংশ নিয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টি অফ রেভলিউশনারি মার্ক্সিস্ট, অল ইন্ডিয়া গোর্খা লিগ–সহ দার্জিলিংয়ের একাধিক রাজনৈতিক সংগঠন।
এ দিনের বৈঠকে বিজেপি–র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলার নির্বাচনী পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত হাজির ছিলেন। পাহাড় নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যখন ঘুঁটি সাজাচ্ছে সেই সময় বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে এই বৈঠক আলাদা মাত্রা তৈরি করেছে। প্রায় ৪০ বছর আগে, ১৯৮০ সালে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে প্রথম সশস্ত্র আন্দোলনের সূচনা করে জিএনএলএফ। জিএনএলএফ'কে তখন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সুভাষ ঘিসিং। কিন্তু সাম্প্রতিককালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার উত্থানের কারণে পাহাড়ে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল জিএনএলএফ। বেশ কয়েক বছরে পাহাড়ের সাংগঠনিক ক্ষমতা অনেকটাই কমে তাদের। বিজেপির সঙ্গে এই বৈঠকের পরে ফের পাহাড়ে রাজনৈতিক অস্তিত্ব বজায় রাখতে চায় সুবাস ঘিসিংয়ের দল।
বৈঠক প্রসঙ্গে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত জানান, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি ইতিমধ্যে ১১টি গোর্খা সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, এই কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয় তার জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার (আরজেআই) সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।’ পাহাড় নিয়ে দিল্লির বৈঠকের পরে অবশ্য সরাসরি মুখ খোলেনি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল ও বিনয়-অনীত শিবির। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, পাহাড়ের লড়াইয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ওপরেই ভরসা রাখবেন তাঁরা।
ABIR GHOSHAL