দশটি পুজো কমিটি কার্নিভালে অংশ গ্রহণ করে। রাস্তায় আঁকা হয় সুদৃশ্য আলপনা। আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি সেখানে প্রচুর পর্যটকদেরও ভিড় লক্ষ করা গিয়েছে। কলকাতার বালিগঞ্জ থেকে দার্জিলিঙে বেড়াতে গিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “প্রতিবারই পুজোর সময় পরিবার নিয়ে আমি বেড়াতে যাই। এবং উত্তরবঙ্গই আমার প্রিয় জায়গা। এ বার গিয়েছিলাম দার্জিলিং-এর বেশ কিছু ‘অফবিট’ এলাকা দেখার জন্য। নবমী পর্যন্ত সেখানেই ছিলাম। দশমীতে নেমে আসি শিলিগুড়িতে। ওই দিন মহানন্দায় বিসর্জন দেখেছি। তারপর শুনলাম কলকাতার মতো এখানেও দুর্গা পুজোর কার্নিভাল হচ্ছে। তাই কার্নিভাল দেখার জন্য উপস্থিত হই। কলকাতায় কার্নিভাল দেখছি। কলকাতার মতো না হলেও এখানকার কার্নিভালে উত্তরবঙ্গের একটা নিজস্বতা রয়েছে। বেশ ভালই লাগল এই কার্নিভাল দেখে।”
advertisement
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী স্বপন দাশগুপ্ত এসেছেন সোদপুর থেকে। এবার লাটাগুড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কার্নিভালের দিন তিনিও উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়িতে। তিনি জানান, “পুজোর ছুটিতে এ বার জঙ্গল দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু শিলিগুড়ির কার্নিভালের কথা শুনে এদিন এখানেই থাকব ঠিক করি। কার্নিভাল সেভাবে কোনও দিন দেখা হয়নি। দেখে বেশ ভালই লাগল। পর পর প্রতিমা গুলোকে সাজিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সত্যি নজরকাড়া ছিল।”
আবার দুর্গাপুর থেকে জয়ন্তী বেড়াতে এসেছিলেন পৌলোমী মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর সময় শহরে প্রচুর ভিড় থাকে। তা এড়াতে প্রতিবারই কোথাও না কোথাও বেড়াতে চলে যাই। এবারে এসেছিলাম জয়ন্তীতে। সেখান থেকে চলে আসি শিলিগুড়িতে। দশমীতে ফাঁকায় ফাঁকায় কয়েকটা জায়গায় ঠাকুর দেখে ফেলি। এর পর জানতে পারি কার্নিভালের কথা। তাই কোনও কথা চিন্তা না করেই দেখতে চলে আসি। বেশ ভাল লেগেছে এই কার্নিভাল দেখে। এরকম ভাবে যদি সংগঠিত ভাবে কার্নিভাল করা যায় তাহলে অবশ্যই পর্যটকরা এখানে আসবে।’’
কার্নিভাল উপলক্ষে প্রশাসনের তরফ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিন কার্নিভালে উপস্থিত হয়েছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব-সহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। এদিন গৌতম দেব বলেন, “কলকাতায় শুরু হয়েছিল কার্নিভাল। গত বছর থেকে জেলায় শুরু হয়েছে। এখানে শিল্পীরা অংশগ্রহণ করছেন। পুজো কমিটির পাশাপাশি প্রশাসনের আধিকারিকরা আছেন৷ প্রত্যেকের প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠান সাফল্যমণ্ডিত রূপ ধারণ করেছে।”
মহানন্দার চারপাশে নিরাপত্তার জন্য ৩২টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এদিন তার উদ্বোধন করেন মেয়র।